সাতক্ষীরার পাটনিদের জীবন যাত্রায় নেমে এসেছে চরম হতাশা প্রকাশিত: ১০:৩৭ অপরাহ্ণ, মে ১৬, ২০১৯ | আপডেট: ১০:৩৭:অপরাহ্ণ, মে ১৬, ২০১৯ মো. আমিনুর রহমান সোহাগ: খেঁয়াঘাটের মানুষ পারাপারের আয় দিয়েই তারা জীবিকা নির্বাহ করত। যাদেরকে সবাই মাঝি(পাটনি) নামেই ডাকত। সেই পাটনীদের খবর আজ কেঊ রাখেনা। নদী গুলো শুকিয়ে যাওয়া এবং ঘন ঘন ব্রীজ নির্মাণে পাটনীরা মানবেতার জীবন-যাপন করছে। সাধারণত নদীর ধারে এদের বসবাস। প্রাকৃতিক দুর্যোগ গুলো সবার আগে এদের উপর আঘাত হানে। তবুও পাটনিদের সামাজিক ভাবে এক ঘোরে করে রাখা হয়েছে। কারণ তারা অন্ত্যজ সম্প্রদায়ের মানুষ। সবাই তাদের ঘৃনা করে। তাদের সাথে অন্য কেউ আত্বীয়তা করে না। তারা সমাজের কাছে অবহেলিত। এমনই এক অবহেলিত পল্লী সাতক্ষীরা জেলার পাটকেলঘাটা থানার ইসলামকাটি খেয়াঘাট মাঝি পাঁড়া। সেখানে যেয়ে দেখা যায়, আধুনিকতার কোন ছাপই পড়েনি তাদের মধ্যে। অত্যান্ত নিন্মমানের জীবন-যাপন করে তারা। কথা হয় নিখিল পাটনীর সাথে। তার বয়স ৭৬ বছর। তিনি বলেন, অতীত কাল থেকে পাটনীদের পূর্ব পুরুষের পেশা ছিল নৌকা চালনা বা মাঝি হিসাবে কাজ করা। সাতক্ষীরা জেলার পাটকেলঘাটা থানার ইসলামকাটি খেয়া ঘাটের মানুষ পারাপার করে যে আয় হত তাই দিয়েই আমরা জীবিকা নির্বাহ করতাম। কিন্তু এখন নদী শুকিয়ে গেছে। মানুষ হেঁটে পারাপার হয়। এখন আমাদের কেও মাঝি বলে হাঁক ডাক দেয় না। দারুণ কষ্টে দিনাতিপাত করছি। সম্ভু পাটনী বলেন, আমরা নাকি নিচু জাত। আমাদের কেও ভালবাসেনা। সবাই ঘৃণার চোখে দেখে। অমল পাটনী, সুন্দর পাটনী, গোপাল পাটনী সহ অনেকে আক্ষেপ করে বলেন, মাঝি বলে কি আমরা উঁচু জায়গায় বসবাস করতে পারব না? আমরাও তো মানুষ! নদীর ধারে বাস করি বলে প্রতি বছর বন্যায় আমাদের ঘরবাড়ী ভেসে যায়। খুব কষ্টে দিনযাপন করতে হয়। সরকার আমাদের দিকে খেয়াল করে না। বর্তমানে আমাদের পূর্ব পুরুষের পেশা বদল করে দিন মজুর সহ অন্যান্য কাজ করতে হচ্ছে। গোষ্টিবদ্ধভাবে আমাদের বসবাস করতে হয়। সমাজে আমাদের নিচু জাত বলে গালি দেওয়া হয়। বেসরকারী একটি এন.জি.ও সংস্থার তথ্য মতে, পাটনীদের মধ্যে প্রায় ৮০% লোক ভূমিহীন। তারা সাধারণত নদী, খাল বা জলাধারের তীরবর্তী অঞ্চলে বসবাস করে। এদের গড় আয় মাসিক মাত্র দু’হাজার টাকা। এদের মধ্যে নিরক্ষর লোকের সংখ্যা প্রায় ৮০.৬৫% এর কাছাকাছি। সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা অঞ্চলে কপোতাক্ষ অববাহিকায় প্রায় ৫ হাজার পাটনী বসবাস করে। বর্তমানে নদের নাব্যতা কমে যাওয়া এবং ঘন ঘন ব্রীজ তৈরী হওয়ায় তারা পেশা বদল করে জীবন যাত্রায় নেমে এসেছে চরম হতাশা। দারুণ অর্থ কষ্টে ভুগছে তারা। তাদের খোঁজ কেউ নেয় না। সুন্দরবনটাইমস.কম/ডেক্স রিপোর্ট কপোতাক্ষের মাঝিনদীর মাঝিপাটনিমাঝি সংবাদটি ৮৩০ বার পড়া হয়েছে আপনার মতামত লিখুন : আরও পড়ুন ঐতিহ্যবাহী ঘানি শিল্পকে আজও আকঁড়ে ধরে রেখেছে ডুমুরিয়ার দুটি পরিবার কেশবপুর থেকে বিলুপ্তির পথে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী গরুর গাড়ি