মাগুরাঘোনায় ২কোটি ১৭লক্ষ টাকা বরাদ্দের রাস্তায় নিন্ম মানের ইট দিয়ে নির্মানের অভিযোগ প্রকাশিত: ৫:২৯ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৮, ২০১৯ | আপডেট: ৫:২৯:অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৮, ২০১৯ নিজস্ব প্রতিবেদক, চুকনগর(খুলনা): মাগুরাঘোনার আলাদিপুর আরএন্ডএইচ বাদুড়িয়া বাজার সড়ক নির্মানে ব্যাপক দূনীতি ও অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। আস্ত ইটের পরিবর্তে আদলা ইট, এক নম্বর ইটের পরিবর্তে দুই নম্বর ইট, বালির পরিবর্তে মাটি রাস্তায় কাজ করা হচ্ছে। একারনে এলাকাবাসী একাধিকবার কাজ বন্দ করে দিয়েছে। তারপর দূনীতিবাজ ঠিকাদার সকলকে বৃন্ধাঙ্গলী দেখিয়ে কাজ করছেন। জানাযায়, ডুমুরিয়া উপজেলাধীন আলাদিপুর আরএন্ডএইচ বাদুড়িয়া বাজার পর্যন্ত স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তরের (এলজিইডি) পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পে ১৪শত মিটার ও ২৮০মিটার রাস্তা নির্মান করার জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়। বরাদ্দ দেয়া হয় ২কোটি ১৬লক্ষ ১৯হাজার ৮শত ১৩টাকা। কাজটি পান আমিন এ্যান্ড কোং নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। কাজ নেন হাওলাদার বাশারত আলী নামে এক ঠিকাদার। কিন্তু শুরুতেই ভুল। কাজ শুরু করেন প্রায় ৬মাস পরে। এরপর দুই পাশের পাইলিং এর কাজ শুরু হয় অত্যন্ত ধীর গতিতে। সেখানে মিকচার ম্যাশিনের পরিবর্তে খোয়া সিমেন্ট ও বালি মেশানো হয় ঝুড়ি কোদাল দিয়ে। পাইলিং এর কাজ শেষ করার কয়েক দিনের মাথায় ৮/১০স্থান হতে পাইলিং ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম প্রায়। এরপর রাস্তার তলদেশে দেয়া হয় ঘোষড়া বিলের কাদা যুক্ত মাটি সে কাদা শুকাতে প্রায় ১মাস সময় লাগে। এ এক মাস এলাকাবাসীর রাস্তা চলাচলে চরম ভোগান্তীর স্বীকার হতে হয়। এবার কাদামাটির উপর ডবল হেয়ারিং বন ইটের রাস্তা করার জন্য প্রথমে ১০হাজার ইট আনা হয়। সাথে সাথে ইউপি সদস্য মাহাবুর রহমান গাজীর নেতৃত্বে শত শত ঘোষড়াবাসী কাজ বন্দ করে দেয়। সেখানে উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার বিদ্যুৎ কুমার দাস সহ স্থানীয় গনমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত হলে ঠিকাদার কথা দেয় ইট ফেরত নেয়া হবে। কিন্তু সে আশার গুড়ে বালি। এক দুই দিন কাজ বন্দ রাখার পর সুচতুর ঠিকাদার ঘোষড়া গ্রামের পাশ দিয়ে কাজ শুরু না করে আবারও আদলা ইট, দুই নম্বর ও রেইন স্পট ইট দিয়ে কাঞ্চনপুর গ্রামের পাশ দিয়ে কাজ শুরু করে। তখন সাবেক ইউপি সদস্য বীর মু্িক্তযোদ্ধার সন্তান আক্তারুজ্জামান বাবলুর নেতৃত্বে গ্রামবাসী মিলে আবারও কাজ বন্দ করে দেয়। তাছাড়া স্থানীয় যুবলীগ নেতা সম রোকনুজ্জামান মন্টুর নেতৃত্বে কয়েকবার কাজ বন্দ করে দেয়া হয়। এভাবে একের পর এক কাজ বন্দ করে দেয়ার পরও দুনীতিবাজ ঠিকাদার বহাল তবিয়তে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়া মহাসড়কের পাশে কাঞ্চনপুর গ্রামের শুরুতে অথ্যাৎ যেখান থেকে কাজ শুরু করা হয় সেখানে এবং ঘোষড়া গ্রামে যাওয়ার পথে বিলের মাঝখানে কালর্ভাটের দুই পাশে তলের হেরিং বনে আদলা ইট দেয়া হয়েছে। আর আদলা ইট বসানোর সাথে সাথে বালির পরিবর্তে মাটি দিয়ে ঢেকে দেয়া হচ্ছে। যাতে কেউ বুঝতে না পারে। জানাযায়, ঘোষড়া গ্রামের শতকরা মাত্র ১জন ব্যক্তিও তার এ কাজে খুশি না। এব্যাপারে ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি লুৎফার রহমান গাজী বলেন,এর থেকে নিচের কাজ আর কোন রাস্তায় হয়েছে বলে মনে হয় না। একজন স্স্থু মানুষ এরাস্তা দিয়ে গেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়বে। মোটর সাইকেল বা বাইকেল নিয়ে এ রাস্তা দিয়ে গেলে মাত্র ১সপ্তাহের মধ্যে তা নষ্ট হয়ে যাবে। ঘোষড়া গ্রামের নুরুল আমীন বলেন, নরম ইট দিয়ে কাজ শুরু করা হলে আমরা কাজ বন্দ করে দিয়েছিলাম। কিন্তু কোন সাহসে তিনি আবারও সেই ইট দিয়ে কাজ চালিয়ে যা্েচছন মাবুদই জানেন। তাছাড়া রাস্তার তলে বা উপরে বালির পরিবর্তে রাস্তার দুই পাশ দিয়ে মাটি কেটে তাই ছড়িয়ে দিচ্ছে। ঘোষড়া গ্রামের আব্দুস সালাম,মোশাররফ হোসেন ও সবুজ বলেন, প্রথম হেয়ারিং বনের পর বালি দেয়ার কথা থাকলেও না দিয়ে সামান্য মাটি দিয়ে দ্বিতীয় বার ইট বসানো হচ্ছে। তাছাড়া দুই পাশে যে পাইলিং করা হয়েছে তাও কয়েক জায়গা থেকে ভেঙ্গে পড়েছে। গ্রামবাসী অনেক বার কাজ বন্দ করে দেয়া সহ অনেক ইট পানিতে ফেলে দিয়েছে। কাঞ্চনপুর ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য আক্তারুজ্জামান বাবলু বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমরা একাধিক বার উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার বিদ্যুৎ কুমার দাসকে জানিয়েছি। কিন্তু অদ্যবধি তাকে এ রাস্তায় আনা সম্ভব হয়নি। আর একারণে ঠিকাদার নিজের ইচ্ছামত ইট দিয়ে রাস্তা তৈরি করছে। এছাড়া আমরা অসংখ্যবার কাজের মান নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক আইডিতে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করে পোষ্ট করেছি। কিন্তু কোন ফল হয়নি। উল্টো ঠিকাদার আমাদের নামে চাঁদা চাওয়ার খোঁড়া অজুহাত দাড় করে আমাদের মানহানি করারও চেষ্টা করেছেন। যাতে আমরা আর কথা বলতে না পারি। ঠিকাদার হাওলাদার বাশারত আলী বলেন, আমি যে ইট দিয়ে কাজ করছি তা আমার দৃষ্টিতে এক নম্বর ইট। গ্রামবাসী কাজ বন্দ করে দেয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, গ্রামবাসী আমার কাছে টাকা চেয়েছিল। আমি তাদেরকে টাকা না দেয়াতে তারা বারবার কাজ বন্দ করে দেয়ার চেষ্টা করেছে বা দিয়েছে। আদলা ইটের ব্যাপারে তিনি বলেন, যেহেতু পুরনো ইট গুলো তার ক্রয় করা সেহেতু পুরনো বা আদলা ইট রাস্তায় দেয়ার এখতিয়ার তার আছে। উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার বিদ্যুৎ কুমার দাস রাস্তায় আদলা ইট দেয়ার ব্যাপারে বলেন, যদি কোথাও আদলা ইট দেয়া হয়। তাহলে সে স্থানটি চিহিৃত করে রাখা হোক প্রয়োজনে সে ইট গুলো আমরা তুলে ফেলে দিব। এব্যাপারে নির্বাহী প্রকৌশলী এএসএম কবির বলেন, আমি বিষয়টি এখনি গুরুত্ব সহকারে দেখছি। সুন্দরবনটাইমস.কম/গাজী আব্দুল কুদ্দুস/চুকনগর সংবাদটি ২৬৯ বার পড়া হয়েছে আপনার মতামত লিখুন : আরও পড়ুন চুকনগরে চিংড়িতে অপদ্রব্য পুশ করায় ভ্রাম্যমান আদালতে জরিমানা চুকনগরে ইঞ্জিন ভ্যান চালাতে গিয়ে ৬ বছরের শিশুর করুন মৃত্যু