তালা উপজেলায় পানির অভাবে পাট জাগ দিতে পারছেনা চাষীরা

প্রকাশিত: ৮:২৪ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১, ২০১৯ | আপডেট: ৮:২৪:অপরাহ্ণ, আগস্ট ১, ২০১৯

সোহাগ মাল্টিমিডিয়া এন্ড ট্র্যাভেলস

ডেক্স রিপোর্ট:

সাতক্ষীরার তালা উপজেলায় পানির অভাবে ক্ষেতের পাট জাগ দিতে পারছেনা চাষীরা। পানির অভাবে অনেকটা নিরুপায় হয়ে পাট কাটতে পারছেনা তারা। প্রাচীনকাল থেকে জেলার পাট চাষীরা পানির জন্য প্রকৃতির উপর নির্ভর করতো। কিন্তু এ বছর আষাঢ়-শ্রাবণে পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়াতে কৃষকের সে আশা হতাশায় রূপ নিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ চাষীরা উৎপাদন খরচ তোলা নিয়ে সংশয়ে রয়েছে।
এদিকে অনেকেই আবার পাটের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে অনেকে আগাম পাট কেটে একই জমিতে আমনের চাষ করতে শুরু করেছে। এরপরও পাটের ন্যায্য দাম পাওয়ার আশা পাট চাষীদের। সংশ্লিষ্টদের দাবী সনাতন পদ্ধতিতে পাট জাগ না দিয়ে আধুনিক পদ্ধতিতে পাটের ছাল ছাড়িয়ে জাগ দেওয়ার ব্যবস্থা করলে এ সমস্যা অনেকটা সমাধান সম্ভব।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে তালা উপজেলায় পাট আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ হাজার ৮শ হেক্টর। আবাদ হয়েছে ২ হাজার ৪শ ৫০ হেক্টর জমিতে।
চাষীরা জানান, এবছর অধিকাংশ জমিতে আবাদ করা হয়েছে তোষা জাতের পাট। তবে অনেক পাটের ক্ষেতে বিছা পোকার দেখা গেছে। আক্রান্ত ক্ষেতে সবুজের পরিবর্তে পাট ক্ষেতের রং লালচে ও হলুদ বর্ণের হয়ে যায়। পাটের উচ্চতা অন্য বছরের তুলনায় কম। এখন পাট কাটার মৌসুম থাকলেও পানির অভাবে পাট কাটা সম্ভব হচ্ছে না । এরপর পানির অভাবে পাট জাগ দেয়াও সম্ভব হচ্ছে না। যে সব এলাকায় পুকুর, ডোবা, খানা কিম্বা নর্দামায় পানি জমা আছে সেইসব এলাকার কৃষকের পাট কাটতে শুরু করেছে।
তালা উপজেলার সরুলিয়া ইউনিয়নের আমতলাডাঙ্গা গ্রামের পাট চাষী শহীদুল গাজী জানান, তিনি ছোট বেলা থেকেই চাষ কাজ করে আসছেন। এবছর সে ৪ বিঘা জমিতে পাটের চাষ করেছেন। পাটক্ষেতে চার বার ভু-গর্ভস্থ পানির সেচ দিয়েও তার ক্ষেতের অনেক পাট শুকিয়ে যাচ্ছে। বাধ্য হয়ে তিনি আগাম পাট কাটার চিন্তা থাকলেও জাগ দেয়ার জন্য পর্যাপ্ত পানি পাচ্ছেনা। তিনি আরও বলেন, গত বছর তার ক্ষেতের পাট ১০ থেকে ১২ হাত পর্যন্ত লম্বা হয় কিন্তু এবছর ৭ থেকে ৮ হাত লম্বা হয়েছে। দাম ভাল পেলে খরচটা ঘরে উঠবে আশা তার। জুজখোলা গ্রামের হাবিুর রহমান জানান আগাম পাট চাষ করেছিলাম পাট কেটে ধান চাষ করার আশায় । বৃষ্টি না হওয়ার কারনে পাট কাটা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে ধান চাষও ব্যাহত হচ্ছে।
তালা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, বৃষ্টি কম হওয়াতে পাটের ফলন তেমন ভাল হয়নি। তবে দাম বেশি হলে কৃষকের ঘাটতি পুষিয়ে যাবে। তবে বৃষ্টি না হলে পাট জাগ দেওয়া নিয়ে বেশ অসুবিধায় পড়তে হবে কৃষকদের।
সাতক্ষীরা পাট অধিদপ্তরের মূখ্য পরিদর্শক আশীষ কুমার দাশ বলেন, প্রাকৃতিক কারণে (পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত না হওয়ায়) অনেক চাষীর পাট জাগ দিতে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। তবে পাট পচন ও বাজারজাত করণের বিষয়ে কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

 

 

 

সুন্দরবনটাইমস.কম/মো: মুজিবর রহমান/পাটকেলঘাটা


আপনার মতামত লিখুন :

নিজস্ব প্রতিবেদক