কেশবপুরে ৪৯ বছর ধরে ভবন ছাড়াই চলছে সদর ইউনিয়ন পরিষদ! প্রকাশিত: ৪:৪৯ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ৯, ২০২০ | আপডেট: ৪:৪৯:অপরাহ্ণ, নভেম্বর ৯, ২০২০ কেশবপুর উপজেলার সুজাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়। স্বাধীনতার দীর্ঘ ৪৯ বছর ধরে নিজস্ব ভবন ছাড়াই চলছে যশোরের কেশবপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদ। ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের ধারাবাহিক উদাসিনতার কারণে বর্তমান একটি পরিত্যাক্ত স্কুল ঘরে চলছে এর প্রশাসনিক কার্যক্রম। অবশেষে ২০১৮ সালে ওই ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান কামাল সুজাপুর মৌজার ৭১ শতক সরকারি খাস জমি বন্দোবস্তসহ ভবন পাবার আবেদন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে। এ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শুধু প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি চালাচালিতেই চলে গেছে ২টি বছর। তবে অধিকাংশ এলাকাবাসি যশোর-সাতক্ষীরা সড়কের মধ্যকুল মৌজায় সদর ইউনিয়ন পরিষদের স্থায়ী ভবন নির্মাণের জোর দাবি জানিয়েছেন। কেশবপুর সদর ইউনিয়নে ২৫ হাজার লোকের বসবাস রয়েছে। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এর প্রশাসনিক কার্যক্রম চলে শহরের একটি সমবায় সমিতির ভবনে। ওই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুস সামাদ বিশ্বাস প্রায় ২৫ বছর ও বর্তমান চেয়ারম্যান প্রভাষক আলাউদ্দীন আলা প্রায় ১৫ বছর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করলেও ইউনিয়ন পরিষদের স্থায়ী ভবন নির্মাণের কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেননি। ২০১৮ সালে কেশবপুরের তৎকালিন ইউএনও মিজানূর রহমান পৌর এলাকা থেকে ওই ইউনিয়ন পরিষদের সকল কার্যক্রম গুটিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের জায়গায় ফিরে যেতে নোটিস প্রদান করেন। এ সময় টনক নড়ে সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ মেম্বারদের। এরপর থেকে ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম চলছে সুজাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি পরিত্যাক্ত টিনসেড ভবনে। ভবন সমস্যা নিরসনে ২০১৮ সালে ১৯ আগস্ট ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান কামাল সুজাপুর মৌজার ৭১ শতক সরকারি জমি বরাদ্দসহ ভবন পাবার লিখিত আবেদন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে। তিনি অভিযোগটির সরেজমিনে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে উপজেলা সহকারি কমিশনারকে (ভূমি) নির্দেশ দেন। তৎকালিন উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) কবীর হোসেন ওই সালের ৪ অক্টোবর সরকারি স্বার্থে শ্রেণি পরিবর্তন করে সদর ইউনিয়ন পরিষদ ভবন নির্মাণের জন্যে ০.৩৩ একর জমি বরাদ্দ দেয়া যেতে পারে বলে প্রতিবেদন দাখিল করেন। এরই প্রেক্ষিতে তৎকালিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানূর রহমান সরকারি সম্পত্তির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপণার জন্যে প্রাপ্ত প্রস্তাব গত ১৬/১০/১৮ তারিখে সুপারিশ সহকারে কেসনথি ও অন্যান্য কাগজপত্রাদি জেলা প্রশাসক বরাবরে প্রেরণ করেন। তৎকালিন জেলা প্রশাসক মোঃ শফিউল আরিফ প্রস্তাবটি অনুমোদন দিয়ে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্যে স্থানীয় সরকার, যশোরের উপ- পরিচালক মোঃ নূর-ই-আলম বরাবরে প্রেরণ করলে তিনি গত ২০১৯ সালের ১৮ মার্চ প্রস্তাবটি অনুমোদন দিয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করেন। এরপর দীর্ঘ দেড় বছর অতিবাহিত হতে চললেও আজও ভবন নির্মাণ হয়নি। বর্তমান এলাকাবাসি ইউনিয়ন পরিষদের ভবন নির্মাণের স্থান নির্ধারণ নিয়ে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েছে। জানা গেছে, ওই ইউনিয়ন পরিষদের ভবন নির্মাণের স্থান নির্ধারণ নিয়ে বর্তমান জটিলতা দেখা দিয়েছে। কেউ ইউনিয়ন পরিষদটি মূলগ্রাম বটতলায়, কেউ আলতাপোল তেইশ মাইলে, কেউ দোরমুটিয়া বাজারে, কেউ বা খতিয়াখালি মোড়ে আবার কেউ মধ্যকুল প্রাইমারী স্কুলের পাশে ভবন নির্মাণের দাবি তুলেছে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মধ্যকুল গ্রামের ব্যবসায়ী আবদুর রাজ্জাক ও আওয়ামী লীগ নেতা আবদুস সাত্তার বলেন, মধ্যকুল প্রাইমারী স্কুল যশোর-সাতক্ষীরা হাইওয়ে সড়কের পাশে অবস্থিত। এখানে ভবন হলে সবাই যোগাযোগ রক্ষা করতে পারবে। তাছাড়া সুজাপুরে যে স্থান অনুমোদনের জন্যে পাঠানো হয়েছে তা কতিপয় ব্যক্তি দখল করে মাছের ঘের করেছে। এজন্যে অধিকাংশ জনগণ মধ্যকুল প্রাইমারী স্কুলের পাশে সদর ইউনিয়ন পরিষদের ভবন নির্মাণের জোর দাবি জানিয়েছেন। ওই ইউনিয়নের মেম্বার অলিয়ার রহমান ও গৌতম রায় বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ ভবনটি তার এলাকার তেইশ মাইলে হলে সবদিক দিয়ে ভালো হয়। মেম্বার আবদুর রহিম ও সংরক্ষিত মহিলা মেম্বার রেহেনা ফিরোজ বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের ভবনটি মধ্যকুল প্রাইমারী স্কুলের পাশে হলে জনগণের জন্য ভাল হবে। সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রভাষক আলাউদ্দীন আলা বলেন, বর্তমান ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম চলছে সুজাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের টিনসেড ভবনে। ওই দ্যিালয়ের মাঠে বছরে ৬ থেকে ৭ মাস পানি থাকে। যার কারণে ইন্টানেট সুবিধাসহসরকারি কর্মকা- পরিচালনা করতে সমস্যা হচ্ছে। ভবন নির্মাণের জন্য জমি অনুমোদন পাওয়া গেছে। সমস্যার কারণে এখনও ভবন নির্মাণ শুরু হয়নি। এ ব্যাপারে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ইরুফা সুলতানা বলেন, কেশবপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদ ভবন নির্মাণের জন্যে যে ০.৩৩ একর জমি বরাদ্দ দেয়া তা গত ৬ অক্টোবর সরেজমিনে পরিদর্শন করা হয়েছে। সংবাদটি ৪৮৭ বার পড়া হয়েছে আপনার মতামত লিখুন : আরও পড়ুন কেশবপুরে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টিতে বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত আজ মধু কবির ১৯৯তম জন্মবার্ষিকী, সাগরদাঁড়িতে সপ্তাহব্যাপী মধুমেলা শুরু