কালভার্ট বন্ধ করে মাছের ঘের: কেশবপুরে ২ হাজার বিঘায় বোরো আবাদ অনিশ্চিত

প্রকাশিত: ৯:৫৮ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২, ২০২১ | আপডেট: ১০:০৪:অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২, ২০২১

যশোরের কেশবপুরে সরকারি রাস্তার কালভার্টের দু’পাশের মুখ বন্ধ করে মাছের ঘের করায় পানি নিষ্কাশন পথ বন্ধ হয়ে ৮ বিলের ২ হাজার বিঘা জমির বোরো আবাদ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। চলতি মৌসুমে কৃষকরা বোরো আবাদ করতে না পারলে কালর্ভাটের মুখ অপসারণ নিয়ে যে কোন সময় ঘের মালিকের সাথে বড় ধরণের সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসি। গত ২৯ ডিসেম্বর এ ব্যাপারে প্রতিকার চেয়ে এলাকার অর্ধশত কৃষকের স্বাক্ষরিত একটি অভিযোগপত্র উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে দাখিল করা হয়েছে।

সোহাগ মাল্টিমিডিয়া এন্ড ট্র্যাভেলস

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার মঙ্গলকোট, বাউশলা, লালপুর, পাঁচপোতা, কালিয়ারই গ্রামের বর্ষার অতিরিক্ত পানি দীর্ঘদিন ধরে হাজুয়ার বিল, চৌহার বিল হয়ে গোড়ার খাল দিয়ে বুড়িভদ্রা ও হরিহর নদীতে নিষ্কাশন হয়ে থাকে। ৭ থেকে ৮ বছর আগে ওই বিলের মঙ্গলকোট ভায়া হিজলডাঙ্গা সরকারি সড়কের কালর্ভাটের দু’পাশের মুখ বন্ধ করে মাছের ঘের করেন মঙ্গলকোট গ্রামের তালেব আলী মোড়লের ছেলে নিছার আলী ও আমজাদ মোড়লের ছেলে ইলিয়াস আলী। ফলে প্রতি বর্ষা মৌসুমে অতিরিক্ত পানি নিষ্কাশন হতে না পেরে ৭ থেকে ৮ গ্রামের নিচু অঞ্চল প্লাবিত হওয়াসহ ফসলের ব্যাপক ক্ষতিসাধিত হচ্ছে। ওই ঘের মালিকদের বিরুদ্ধে ইতোপূর্বে এলাকাবাসি প্রশাসনের একাধিক দপ্তরে কয়েকবার অভিযোগ দিলেও কোন প্রতিকার মেলেনি। তারা প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ তাদের ভয়ে মুখ খুলতে সাহস পায় না বলে অভিযোগ।

বাউশলা গ্রামের কৃষক ওয়াজেদ আলী মোড়ল জানান, ইরি মৌসুমে অন্যান্য এলাকায় ধান রোপণ শুরু হয়েছে। জলাবদ্ধতার কারণে আমাদের গ্রামের কৃষকরা এখনও জমি প্রস্তুত করতে পারেনি। বছরের একটি মাত্র ফসল বোরো আবাদ করতে না পারলে এলাকার মানুষের খাদ্য ঘাটতি দেখা দিতে পারে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, শুষ্ক মৌসুমে ওই ঘের মালিকেরা পানি নিষ্কাশনের নামে দরিদ্র কৃষকদের কাছ থেকে অর্থ বাণিজ্য করে থাকেন। যে কারণে তারা পানি আটকে রেখে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করেছে।

ঘের মালিক ইলিয়াস আলী অর্থ বাণিজ্যের কথা অস্বীকর করে বলেন, পত্রিকায় লিখে কোন লাভ হবে না। গোড়ার খালের মুখে বাঁধ দেয়া আছে। তা অপসারণ কাজ চলছে। কালর্ভাটের কারণে ওই এলাকায় জলাবদ্ধতার অভিযোগ সঠিক নয়।

এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট এলাকার চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন বলেন, তার নের্তৃত্বে হরিহর নদীর গোড়ার খালের মুখের বাঁধ অপসারণ করা হয়েছে। কিন্তু হাজুয়ার বিল ও চৌহার বিলের ঘেরের কালর্ভাটের বন্ধ মুখ খুলে না দিলে পানি নিষ্কাশন হবে না। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবহিত করা হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এম এম আরাফাত হোসেন বলেন, কৃষকদের বোরো আবাদে সর্বাতœক সহযোগিতা করা হবে। কৃষকদের অভিযোগটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার জন্যে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে বলা হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মহাদেব চন্দ্র সানা বলেন, অফিস বন্ধ থাকার কারণে অভিযোগের কপি এখনও পাওয়া যায়নি। অভিযোগের কপি পাওয়ার পর তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

মশিয়ার রহমান। নিজস্ব প্রতিবেদক। কেশবপুর, যশোর