ভোমরা স্থলবন্দর অর্থবছরের ১১ মাসে রাজস্ব ঘাটতি ২৯২ কোটি ৪৭ লাখ টাকা

প্রকাশিত: ৯:১৬ অপরাহ্ণ, জুন ১০, ২০২২ | আপডেট: ৯:১৬:অপরাহ্ণ, জুন ১০, ২০২২

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কর্তৃক নির্ধারিত রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা থেকে ভোমরা স্থলবন্দরে ঘাটতি পড়েছে ২৯২ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। যা মূল রাজস্ব আদায় লক্ষ্যমাত্রার ৩০ শতাংশ। তবে ব্যবসায়ীরা জানান, সব পণ্য আমদানি করতে দেয়া হলে ব্যবসায়ীরা যেমন লাভবান হবেন, তেমনি সরকারের রাজস্বও অনেকাংশে বেড়ে যাবে। এছাড়া এ বন্দরে পণ্য আমদানিতে নানা বৈষম্যের কারণে বন্দরে কাঙ্ক্ষিত রাজস্ব আদায় হচ্ছে না।  

সোহাগ মাল্টিমিডিয়া এন্ড ট্র্যাভেলস

ভোমরা শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব শাখা থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, চলতি ২০২১-২০২২ অর্থবছরে (জুন-জুলাই) জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ভোমরা বন্দরে রাজস্ব আদায় লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেয় ৯৮৫ কোটি ৪ লাখ টাকা। গেল ১১ মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৬৯২ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। যা লক্ষ্যমাত্রা থেকে পিছিয়ে রয়েছে ২৯২ কোটি ৪৭ লাখ টাকা।

২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ভোমরা বন্দর ব্যবহার করে রাজস্ব আদায় করা হয়েছে ৪৪ কোটি ৫২ লাখ টাকা, আগস্টে ৫৭ কোটি ৬৩ লাখ, সেপ্টেম্বরে ৭৩ কোটি ৩০ লাখ, অক্টোবরে ৭১ কোটি ২৮ লাখ, নভেম্বরে ৭৪ কোটি ২৮ লাখ, ডিসেম্বরে ৫৫ কোটি ২৭ লাখ, জানুয়ারিতে ৫৯ কোটি ২০ লাখ, ফেব্রুয়ারিতে ৬২ কোটি ৪১ লাখ, মার্চে ৯৩ কোটি ৯৮ লাখ, এপ্রিলে ৫৭ কোটি ৪৬ লাখ এবং মে মাসে ৪৩ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। উল্লিখিত পরিমাণ রাজস্ব আদায়ে এনবিআরের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ঘাটতি পড়েছে ২৯২ কোটি ৪৭ লাখ টাকা।

ভোমরা স্থলবন্দর সূত্র আরো জানায়, গত অর্থবছরের ১১ মাসে রাজস্ব আয় হয়েছিল ৭২৭ কোটি ৩৬ লাখ টাকা, যা চলতি অর্থ বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩৪ কোটি ৪৩ লাখ টাকা বেশি।

ভোমরা সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ আলম খান জানান, কলকাতা থেকে ভোমরা বন্দরের দূরত্ব কম হওয়ায় বন্দরটি দিয়ে পণ্য আমদানি-রপ্তানির সুযোগ বেশি। তবে বন্দরটি দিয়ে সকল পণ্য আমদানি রপ্তানির সুযোগ নেই। এ কারণে ভোমরা বন্দর সম্ভাবনাময় হওয়ার পরও রাজস্ব ঘাটতি পড়ছে।

তিনি আরও জানান, এখানে একটি কাস্টমস হাউজ প্রয়োজন। সেটি হলেই সকল পণ্য আমদানি-রপ্তানির সুযোগ সৃষ্টি হবে। তখন বর্তমানে যে রাজস্ব আদায় হচ্ছে সেটি আগামীতে দ্বিগুণ হয়ে যাবে।

ভোমরা সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আলহাজ্ব কাজি দিলওয়ার নওশাদ রাজু জানান, ভোমরা বন্দর অনেক সম্ভাবনাময় হওয়ার পরও সরকারের বিপুল পরিমাণ টাকা রাজস্ব ঘাটতি পড়েছে। এ ঘাটতির অন্যতম কারণ হচ্ছে বন্দরটি ব্যবহার করে সব ধরনের পণ্য আমদানি করতে না দেয়া।

তিনি আরো বলেন, ব্যবসায়ীদের সব পণ্য আমদানি করতে দেয়া হলে ব্যবসায়ীরা যেমন লাভবান হবেন, তেমনি সরকারের রাজস্বও অনেকাংশে বেড়ে যাবে। এছাড়া এ বন্দরে পণ্য আমদানিতে নানা বৈষম্যের কারণে বন্দরে কাঙ্ক্ষিত রাজস্ব আদায় হচ্ছে না।

এ ব্যাপারে ভোমরা শুল্ক স্টেশনের দায়িত্বরত কাস্টমসের বিভাগীয় সহকারী কমিশনার আমীর মামুন জানান, বৈশ্বিক মহামারী করোনাসহ নানা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে চলতি অর্থবছরের ১১ মাস অতিবাহিত হয়েছে। এ সময়ে ব্যবসা-বাণিজ্য মন্দা যাওয়ায় নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী রাজস্ব আদায় করা সম্ভব হয়নি।

তিনি বলেন, মূলত বন্দর ব্যবহারকারীদের পণ্য আমদানি-রফতানির ওপর রাজস্ব আদায় নির্ভর করে। এখনো এক মাস সময় সামনে রয়েছে। এ সময়ের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হলেও ঘাটতির ব্যবধান কমে আসবে।

ভোমরা স্থল বন্দরের উপ-পরিচালক মনিরুল ইসলাম জানান, ভোমরা স্থলবন্দরের কাস্টমস হাউজ নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। আগামী ২২ ডিসেম্বর এটি উদ্বোধন হবে। তখন সকল পণ্য আমদানি-রপ্তানির সুযোগ সৃষ্টি হবে। ফলে রাজস্ব আদায়ও বেড়ে যাবে।

 

এসজি/ডেক্স


আপনার মতামত লিখুন :

নিজস্ব প্রতিবেদক। ডেক্স