চুকনগরে পেরিলা ভোজ্য তেলের চাহিদা পূরণে কৃষকদের উৎস যোগান দিচ্ছে কৃষি বিভাগ প্রকাশিত: ১২:৪৯ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৬, ২০২০ | আপডেট: ১২:৪৯:অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৬, ২০২০ Perilla frutescence খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলায় আধুনিক হচ্ছে মানুষ। পরিবর্তিত হচ্ছে খাদ্যাভ্যাস। যার প্রভাব পড়ছে ভোজ্য তেলে। চাহিদা মেটাতে প্রতি বছর দেশে তেল আমদানির পরিমাণ ১৫-১৭ লাখ মেট্রিক টন, যার বাজারমূল্য দেড় থেকে দুই শত কোটি মার্কিন ডলার। অর্থাৎ আমদানির বড় একটা অংশ ব্যয় হয় ভোজ্যতেলে। কৃষি বিজ্ঞানীদের ধারণা, অধিক উৎপাদনশীল ও পুষ্টিসমৃদ্ধ নতুন কোনো তৈলবীজের জাত বাংলাদেশে উদ্ভাবন করা গেলে আমদানি ব্যয় অনেকাংশে কমানো সম্ভব। দেশে তেলের স্থান দখল করে আছে মূলত সরিষা ও সয়াবিন। এর মধ্যে সরিষা দেশে উৎপাদন হলেও সয়াবিনের চাহিদা পূরণ করা হয় বিদেশ থেকে আমদানি করে। নতুন তৈলবীজ হিসেবে বাংলাদেশে ভূমিকা রাখতে যাচ্ছে ‘পেরিলা’। যা একটি তেলজাতীয় ফসল। বৈজ্ঞানিক নাম Perilla frutescence। আদি নিবাস চীন হলেও সারাবিশ্বে এটি কোরিয়ান পেরিলা নামেই পরিচিত। তবে সময়ের পরিক্রমায় এটি বিস্তৃত হয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, ভিয়েতনাম, ভারত ও থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশে। বাংলাদেশেও অপার সম্ভাবনার জানান দিচ্ছে এ পেরিলা। পেরিলার গবেষণার মাধ্যমে সেই স্বপ্ন পূরণের পথে রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) কয়েকজন গবেষক। শেকৃবি কৃষিতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. এইচএমএম তারিক হোসাইনের তত্ত্বাবধানে পেরিলা গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন তারই পিএইচডির ছাত্র আবদুল কাইয়ুম। গবেষণার উপ-তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে রয়েছেন অধ্যাপক ড. এএফএম জামাল উদ্দীন, অধ্যাপক ড. পরিমল কান্তি বিশ্বাস এবং অধ্যাপক ড. আবদুল্লাহ হেল বাকী। গবেষক আবদুল কাইয়ুম বলেন, পেরিলা ভোজ্যতেল-জাতীয় ফসল, যার শতকরা ৬৫ ভাগই ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড। এ অসম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিড আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। বিশেষত হৃৎযন্ত্র, মস্তিষ্ক ও ত্বকসহ ডায়াবেটিস রোগে এটি কার্যকর ভূমিকা রাখে। মূলত সুস্বাস্থ্য ও জমির সর্বোচ্চ ব্যবহারের দিককে গুরুত্ব দিয়ে আমরা এ গবেষণা বেছে নিয়েছি। মূল জমিতে পেরিলার জীবনকাল ৭০ থেকে ৭৫ দিন হওয়ায় সহজেই এটিকে চার ফসলি জমির আওতায় আনা সম্ভব। উদ্ভিদটির একেকটি পুষ্পমঞ্জুরিতে ১০০ থেকে ১৫০টি বীজ পাওয়া যায় বিধায় অন্যান্য তেল ফসল থেকে এর উৎপাদনমাত্রা বেশি হবে। উপজেলার চুকনগর গ্রামের কৃষক মেহেদী হাসান বাবলু বলেন, আমি কৃষি অফিসের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ নিয়েছি। এবং কৃষি অফিসারের মাধ্যেমে পেরিলার বীজ সংগ্রহ করে চাষ শুরু করেছি। আশা করি ভালো ফলন পাবো। পাশাপাশি আমার পরিবারসহ এলাকার লোক এর তেল ব্যবহার করে হৃদরোগের মত অসুখ থেকে রেহাই পেতে মূলত পেরিলা চাষে আগ্রহী হয়েছি। ডুমুরিয়া উপজেলার কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ মোছাদ্দেক হোসেন বলেন, পেরিলার পাতা সবজি হিসেবে ও বীজকে তেল উৎপাদনে লাগিয়ে মূলত দুইভাবে এটি ব্যবহার করা যায়। বিদেশ থেকে এর পাতা আমদানি করে উন্নতমানের রেস্তোরাঁ গুলোতে ব্যবহার করা হয়। যা চাষ করতে পারলে অর্থনীতিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। এ ছাড়াও পেরিলা ক্ষেতে মৌমাছির ব্যাপক আনাগোনায় বাণিজ্যিকভাবে মধু উৎপাদন করাও সম্ভব। এ ফসল উৎপাদনে তুলনামূলকভাবে পানি কম লাগে। ফলে আলাদা কোনো সেচের প্রয়োজন হয় না। সংবাদটি ৫৬৬ বার পড়া হয়েছে আপনার মতামত লিখুন : আরও পড়ুন চুকনগরে চিংড়িতে অপদ্রব্য পুশ করায় ভ্রাম্যমান আদালতে জরিমানা চুকনগরে ইঞ্জিন ভ্যান চালাতে গিয়ে ৬ বছরের শিশুর করুন মৃত্যু