কেশবপুরের মঙ্গলকোট গ্রামের ৪ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তাটি আজও পাকাকরণ হয়নি প্রকাশিত: ৬:২৯ অপরাহ্ণ, আগস্ট ৩০, ২০২০ | আপডেট: ৬:২৯:অপরাহ্ণ, আগস্ট ৩০, ২০২০ যশোরের কেশবপুর উপজেলার মঙ্গলকোট বাজার হতে গোলাঘাটা ব্রিজ ভায়া মঙ্গলকোট আকুঞ্জি পাড়া জামে মসজিদ পর্যন্ত প্রায় ৪ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তাটি আজও পাকাকরণ হয়নি, জনদূর্ভোগ চরমে। ওই রাস্তাটি দ্রুত পাকাকরণের দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী। এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন শত শত লোক কাঁদা ভেঙ্গে যাতায়াত করে থাকে। একটু বর্ষা হলে কর্দমাক্ত হয়ে যায়। ফলে কোন ভ্যান, সাইকেল, মোটল সাইকেলতো দূরের কথা মানুষ পর্যন্ত চলাচল করতে পারে না। জনগুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি দিয়ে মঙ্গলকোট, বিদ্যানন্দকাটি, মজিদপুর, সফরাবাজ,আলতাপোলসহ বিভিন্ন গ্রামের লোকজন যাতায়াত করে থাকেন। মঙ্গলকোট গ্রামের মানুষের প্রাণের দাবী, এ রাস্তাটি পাকাকরণ করা হলে একদিকে যেমন বিভিন্ন গ্রামের ছাত্র-ছাত্রী ও লোকজনের যাতায়াতে ভোগান্তি কমবে। অন্যদিকে মূমুর্ষ রোগী বহন করতে বেগ পেতে হবেনা। শ্রমজীবি মানুষেরা ভ্যান, অটো-রিক্সা ইত্যাদি চালিয়ে সংসার চালাতে পারবে। এলাকার কৃষকরা ধান, পাট, কাঁচা ফসল কম খরচে বাজারে নিয়ে যেতে পারবে। প্রয়াত শিক্ষামন্ত্রী এএসএইচকে সাদেকের আমলে রাস্তাটিতে মাটি পড়েছিল, বিদ্যুতের ছোঁয়া লেগেছিল, নদী পারাপারের জন্য মিনি ব্রিজ হয়েছিল। তারা মনে প্রাণে বিশ্বাস করেছিলেন, রাস্তাটিও পাকা হয়ে যাবে। সংশ্লিষ্ট ইউপি মেম্বার জহির রায়হান জানান, মঙ্গলকোট ইউনিয়নে একই গ্রামের মধ্যে মঙ্গলকোট বাজার ভায়া গোলাঘাটা ব্রিজ ৭.৬৩ কিঃমিঃ রাস্তাটি সবচেয়ে দীর্ঘতম। তার মধ্যে ২.৫ কিঃমিঃ কার্পেটিং, ১কিঃমিঃ ইটের হেয়ারিং, ০.৫ কিঃমিঃ ইটের সোলিং এবং বাকী প্রায় ৪ কিঃমিঃ কাঁচা রয়েছে। যুগ যুগ ধরে এলাকার জনগণ রাস্তাটি পাকাকরণের জন্য দাবি জানিয়ে আসছেন। এবার যিনি এমপি হয়েছেন তিনি তাদের প্রাণের দাবিটা পূরণ করবেন বলে তারা বিশ্বাস করেন। সংশ্লিষ্ট এলাকার প্রাক্তন ইউপি মেম্বার হাবিবুর রহমান গাজী জানান, রাস্তাটি অত্যান্ত জনগুরুত্বপূর্ণ। জনদূর্ভোগ লাঘব করতে রাস্তাটি পাকাকরনের প্রয়োজন। তার আমলে আড়াই কিলোমিটার পিচের রাস্তা হয়েছে বলে দাবী করেন। সংশ্লিষ্ট এলাকার সমাজ সেবক মাস্টার আবদুল লতিফ সরদার জানান, কাঁদার ভয়ে মঙ্গলকোট বাজারে যেতে পারিনা। রাস্তাটি অত্যান্ত জনগুরুত্বপূর্ণ। তিনি পাকাকরনের দাবী করেন। মঙ্গলকোট ইউনিয়ন কৃত্রিম প্রজনন টেকনিশিয়ান মফিজুর রহমান জানান, বর্ষা হলে ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকায় যেতে পারি। কিন্তু গোলদার পাড়া থেকে কাঁদার কারণে এই রাস্তায় ঢুকতে পারিনা। এই জনগুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি অবহেলিত অবস্থায় রয়েছে। গোলাঘাটা দারুস সুন্নাহ দাখিল মাদ্রাসার সদ্য অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক এনামুল কাদির জানান, আমার বাড়ির পুকুর পাড় থেকে গোলাঘাটা হয়ে গোলদারপড়া পর্যন্ত প্রায় ৪ কিঃ মিঃ কাঁচা রাস্তাটি অত্যান্ত খারাপ। বর্ষা মৌসূমে এলাকার ছাত্র-ছাত্রীদের গোলাঘাটা হাইস্কুল, গোলাঘাটা মাদ্রাসায়, মঙ্গলকোট প্রাইমারী ও হাইস্কুল, কেশবপুর কলেজে যেতে দারুন কষ্ঠ করতে হয়। মানুষ হাট-বাজারে যেতে পারেনা। কোন মুমূর্ষ রোগি কেশবপুর হাসপাতালে নেওয়ার উপায় থাকেনা। এলাকার লোক জনের বিপদ আপদ হলে বর্ষার সময় কোন এ্যাম্বুলেন্স যেতে পারবে না। ফলে যোগাযোগের অভাবে রোগী মারাও যেতে পারে। রাস্তাটি অত্যান্ত জনগুরুত্বপূর্ণ। এবার তিনি রাস্তাটি হবার আশা করছেন। ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি নিজাম উদ্দীন গোলদার জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের অঙ্গীকার বাস্তবায়নের জন্য জনপ্রতিনিধিদের এগিয়ে আসা উচিৎ বলে তিনি মনে করেন। রাস্তাটি পাকাকরণের জন্য সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানের নিকট দাবী রেখেছেন। ভ্যান চালক আহম্মদ আলী গাজী, হারুণ মোড়ল, আকবর আলী গোলদার জানান, ওই ওয়ার্ডের মধ্যে ২০ থেকে ২৫ জন ভ্যান, করিমন, আলমসাধু চালক আছে। তাদের দাবী মঙ্গলকোট বাজার থেকে গোলাঘাটা হয়ে মঙ্গলকোট ঠাকুর বাড়ি পর্যন্ত পাকা থাকলে তারা কিছু উপার্জন করে সংসার চালাতে পারতো। তাদের প্রাণের দাবী এই রাস্তাটি পাকা হোক। মঙ্গলকোট ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বজলুর রহমান সরদার জানান, অবহেলিত জনগুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি পাকা করা অত্যান্ত প্রয়োজন। রাস্তাটি সংসদ সদস্য শাহীন চাকলাদারের মাধ্যমে পাকা হবে বলে আশা করি। মঙ্গলকোট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মনোয়ার হোসেন অসুস্থ্যতার কথা জানালে সচিব মোকলেছুর রহমান জানান, ওই রাস্তাটি বড় প্রজেক্ট ছিল। সে কারণে প্রয়াত এমপি ইসমাত আরা সাদেক এর নিকট দেওয়া হয়েছিল। এব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী মুনছুর আলী জানান, ওই রাস্তাটি পাকাকরণের একটি প্রকল্প সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সংবাদটি ৭৬৫ বার পড়া হয়েছে আপনার মতামত লিখুন : আরও পড়ুন কেশবপুরে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টিতে বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত আজ মধু কবির ১৯৯তম জন্মবার্ষিকী, সাগরদাঁড়িতে সপ্তাহব্যাপী মধুমেলা শুরু