কালিগঞ্জে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ডাঃ হজরত আলীকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন প্রকাশিত: ৪:০১ অপরাহ্ণ, আগস্ট ৬, ২০২০ | আপডেট: ৪:০১:অপরাহ্ণ, আগস্ট ৬, ২০২০ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, থানা সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি ও বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা. হজরত আলী (৯০)। বুধবার (৫ আগস্ট) বেলা ১১ টার দিকে সাতক্ষীরার উত্তর কালিগঞ্জ শহীদ সামাদ স্মৃতি ময়দানে মরহুমের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক রাসেলের নেতৃত্বে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। জানাজায় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদী, থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দেলোয়ার হুসেন, মরহুমের জামাতা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও তারালী ইউপি চেয়ারম্যান এনামুল হোসেন ছোট, সাতক্ষীরা জেলা জাতিয় পাটির সাধারন সম্পাদক মোঃ আশরাফুজ্জামান আশু, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কালিগঞ্জ ইউনিটের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার আব্দুল হাকিম, মথুরেশপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ মাহবুবর রহমান সহ বিভিন্ন পর্যায়ের রাজনৈতিক ও মুক্তিযোদ্ধা নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। পরবর্তীতে উপজেলার মথুরেশপুর ইউনিয়নের হাড়দ্দহ গ্রামে বাদ জোহর দ্বিতীয় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে মরহুমের দাফন সম্পন্ন হয়। প্রসঙ্গত, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৬৬ সালে ঐতিহাসিক ছয়দফা ঘোষণা করার পর মাঠে নেমে পড়েন ডা. হজরত আলী। ১৯৭০ সালের ডিসেম্বরে সাধারণ নির্বাচনের পূর্বে কিছু সময়ের জন্য বঙ্গবন্ধু কালিগঞ্জ আসেন। বঙ্গবন্ধুর সাথে সাক্ষাতের সুযোগ হয় ডা. হজরত আলীর। এসময় তিনি বঙ্গবন্ধুর সাহচর্যে মুগ্ধ হন। বঙ্গবন্ধুর ১৯৭১ এর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ শুনে স্থানীয় অনেক যুবক মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য আগ্রহ প্রকাশ করলে তিনি তাদেরকে ঐক্যবদ্ধ করেন এবং ট্রেনিং এর জন্য নাম তালিকাভুক্ত করেন। বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে তিনি গঠন করেন সংগ্রাম পরিষদ। ১১ সদস্যবিশিষ্ট থানা সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি ছিলেন ডা. হজরত আলী। সাধারণ সম্পাদক ছিলেন মাষ্টার জেহের আলী। ডা. হজরত আলীর নেতৃত্বে সংগ্রাম পরিষদ নাম তালিকাভুক্ত করা সকলকে ভারতে ট্রেনিং ক্যাম্পে যাওয়ার ব্যবস্থা করেন। পরবর্তীতে ২৭ মার্চ ডা. হজরত আলী নিজে সীমান্ত নদী ইছামতি পার হয়ে শুন্যেরবাগান শরণার্থী ক্যাম্পে অবস্থানরত ব্যক্তিদের চিকিৎসা সেবা প্রদান শুরু করেন। তবে বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকারের কাছ থেকে কোন সম্মানি ভাতা নেন নি তিনি। মুক্তিযুদ্ধ শেষে তিনি দেশে ফেরেন। অনেক মুক্তিযোদ্ধাদের অনুরোধ সত্বেও তিনি মুক্তিযোদ্ধা সনদ নেন নি। মৃত্যুর পর কালিগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নেতৃবৃন্দের উদ্যোগে ডা. হজরত আলীকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হয়। ডা. হজরত আলী স্ট্রোকসহ বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় দীর্ঘদিন অসুস্থ অবস্থায় থাকার পর মঙ্গলবার (৪ আগস্ট) বিকেল পৌনে ৫ দিকে উত্তর কালিগঞ্জ শহীদ সামাদ স্মৃতি ময়দান সংলগ্ন নিজস্ব বাড়িতে শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন। সংবাদটি ৫৩৬ বার পড়া হয়েছে আপনার মতামত লিখুন : আরও পড়ুন কালিগঞ্জে ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্যে পাকানো আম জব্দ সন্তান প্রসবের পর সাফ জয়ী সাতক্ষীরার নারী ফুটবলার রাজিয়া খাতুনের মৃত্যু