ভালবাসার গল্প: “অতৃপ্ত ভালবাসা” (পর্ব-১) প্রকাশিত: ১২:২৮ পূর্বাহ্ণ, মে ২৭, ২০২০ | আপডেট: ১২:৫৫:পূর্বাহ্ণ, জুন ২৪, ২০২০ জয়া আপা, জয়া আপা, ওঠেন ডাকতে থাকে কাজের মেয়ে হেনা। জয়া: কি হয়েছে? কয়টা বাজে? হেনা: ৭ টা। জয়া: তবে আমাকে ডাকলি কেনো? রাগে জয়ার চোখ লাল হয়ে যায়! হেনা: আম্মা আপনাকে ডাকছে। জয়া আম্মুর কাছে যায়। রাগান্বিত কন্ঠে আম্মুকে বলে: তুমি যানো না, এতো সকালে আমি ঘুম থেকে উঠতে পারি না! আম্মু: যানি, হাত-মুখ ধুয়ে এই নাস্তার ট্রেটা নিয়ে পাপার রুমের দিয়ে আয়। জয়া: বাড়ীতে এতো মানুষ থাকতে, আমি যাবো কেন? আম্মু: গেলেই বুঝতে পারবি। তোর পাপা তোর জন্য অপেক্ষা করছে। জয়া ট্রে টা হাতে নিয়ে দরজায় দাড়িয়ে দেখে পাপা এবং অপরিচিত একটা ছেলে বসে কথা বলছে। জয়া: পাপা আসবো? পাপা: এসো আম্মু। জয়া ট্রে টা টেবিলের উপরে রাখে। পাপা: জয়া মা, এই রোহিত। তুমি যে কলেজে ভর্তি হয়েছো ও সেই কলেজ থেকেই এ+ গ্রেড পেয়ে এইচএসসি পাস করছে এবং অনার্স ওই কলেজ থেকেই করবে। আর রোহিত ও জয়া আমার বড় ভাইয়ের মেয়ে। জয়া এ গ্রেড পেয়ে এইচএসসি পাস করছে। রহিত: হাই জয়া। জয়া: নরম সুরে হাই। পাপা: আম্মু রহিত কে নাস্তা দাও। জয়া কেকের একটা প্রিচ রোহিতের হাতে এবং অন্য একটা প্রিচ পাপার হাতে তুলে দেয়। পাপা: আম্মু বসো! জয়া বসে। এমন সময় পাপার ফোন বেজে ওঠে। পাপা: তোমরা কথা বলো আমি আসছি। আর জয়া তুমি রোহিতের সাথে ভালোভাবে পরিচিত হয়ে নাও। তাহলে কলেজে যাওয়ার আগে ভালো একটা বন্ধু পেয়ে যাবে। জয়া হাসে, পাপা চলে যায়। জয়া মাথা নিচু করে বসে থাকে। রোহিতের কেক খাওয়া শেষ হয়। জয়া বুঝতে পেরে কেটলি থেকে চা ঢেলে রোহিতের দিকে এগিয়ে দেয়। চা নিতে নিতে রোহিত বলে তুমি লজ্জা পাও কেন? জয়া: নাতো! রোহিত: তোমার হাসিটা খুব সুন্দর। জয়া মাথা আরও নিচু করে। রোহিত: তুমি কোন বিভাগ থেকে পাশ করছো। জয়া: মানবিক। রোহিত: আমারটা জানতে চাইলে না? জয়া: বলেন। রোহিত শব্দ করে হেসে ওঠে। জয়া চোখ তুলে তাকায়। রোহিতের চোখে চোখ পড়ে জয়ার। কী গভীর কালো তীক্ষ্ম চোখ দুটি। সেই চোখের দিকে তাকালে যে কোন মেয়ে কিছু সময়ের জন্য তার সব দুঃখ ভুলে যাবে। জয়া চোখ নামায়। রোহিত তখনও হাসে। জয়া বুঝতে পারেনা রোহিত কেন হাসে। রোহিত: আমরা দু’জন যখন একই কলেজে একই ইয়ারে পড়ি, তখন তো আমরা বন্ধু! আর বন্ধুকে কি কেউ আপনি বলে? জয়া লজ্জা পেয়ে রুম থেকে চলে যায়। নিজের রুমে বসে ভাবে কি সুন্দর গুছিয়ে কথা বলে রোহিত। আর কি সুন্দর করে হাসে। রোহিতের চোখ দুটির কথা ভেবে নিজের চোখ বন্ধ করে মনের চোখ দিয়ে রোহিতকে দেখার চেষ্টা করে। তবে রোহিতের চোখ দুটি ছাড়া কিছুই দেখতে পায় না জয়। রোহিত কে দেখার অনুভূতি জাগে তার। সে বারান্দায় গিয়ে দাঁড়ায়। ৫ মিনিট পর রোহিত রুম থেকে বের হয়। জয়ার সাহস হয়না রোহিতের দিকে তাকাতে। রোহিত গেটের বাইরে চলে যায়। জয়া গেটে যায়। পেছন থেকে রোহিতকে দেখে যতদূর পর্যন্ত দেখা যায় পলকহীন ভাবে তাকিয়ে থাকে। জয়া বুঝতে পারে রোহিত অনেক লম্বা তার উচ্চতা ৫ ফুট ৮-৯ ইঞ্চি হবে। জয়া রোহিতের চেহারাটা মনে আঁকার চেষ্টা করে। এমন সময় জয়ার ছোট কাকি পাশ থেকে বলে নাক, চোখ, চুল, ঠোঁট সুন্দর। আর সব থেকে সুন্দর গায়ের রং শ্যামলাবরণ। যে রঙে ছেলেদের বেশি সুন্দর লাগে, এক কথায় রাজকুমার। জয়া: কি বলছো মামনি? মামনি: বুঝেও না বুঝার ভান করছো কেন আম্মু? জয়া: সত্যিই বুঝতে পারছি না, কার কথা বলছো? মামনি: রোহিতের কথা। জয়া: তুমি ওকে দেখেছো? মামনি: তুমি দেখনি? জয়া: না শুধু চোখ দুটো দেখছি এক পলক। ওকে দেখলে চিনতে পারবো না। মামনি: কলেজে যাওয়ার পর চিনে নিও। জয়া: কিভাবে? মামনি: তুমি তাকে না দেখলে কি হবে সে তোমাকে ঠিকই দেখছে, আর দেখবে নাইবা কেন! আমাদের মেয়েটাকে একবার দেখলে পৃথিবীর যে কোন মানুষের মনে আর একবার দেখার ইচ্ছা জাগে। জয়া হাসে। জয়া অপরূপ সৌন্দর্যের অধিকারী। মামনি: রুমে চলো। কলেজে যেয়ে ভালো করে দেখো। জয়া: মামনি তুমি খুব দুষ্টু। মামনি: সেটাই ঠিক। এবার চলো। জয়া তার ছোট কাকিকে মামনি বলে ডাকে। তার ছোট কাকি জয়াকে খুব ভালবাসে, বান্ধবীর মতো মিশে থাকে জয়ার সাথে। জয়ার ছোট চাচার এক ছেলে, তার নাম জয়। জয় ক্লাস নাইনের ছাত্র। জয় আর জয়া সারাক্ষণ দুষ্টামি করে বাড়িটাকে মাতিয়ে রাখে। মাঝে মাঝে জয়ার আম্মু বলে জয়ার বিয়ে হলে তুই কিভাবে থাকবি জয়? জয় বলে, আমি আপুকে কখনো কোথাও যেতে দিব না। আর জয়া বলে, “আমি সারা জীবন জয়ের কাছে থাকবো”। জয়ার আব্বুরা দুই ভাই। দুই ভাই একই সাথেই থাকে। এই পরিবারের সবাই সবাইকে অনেক বেশি ভালোবাসে। আজ সকাল থেকে জয়া খুব অস্থির হয়েছে আছে। সে আজ প্রথম কলেজে যাবে। পাপা জয়াকে নিয়ে সকাল ৯টায় বাসা থেকে বের হয়। সাড়ে নয়টায় তারা কলেজে পৌছায়। ১০টায় ক্লাস শুরু। পাপা জয়াকে এক স্যারের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়। স্যারের নাম আদিত্য। স্যার: আপনার মেয়েতো আমারই মেয়ে। ওকে নিয়ে চিন্তা করতে হবে না। পাপা: ঠিক আছে। তাহলে তুমি থাকো মামনি। আমি কাজে গেলাম। পাপা চলে যায়। ১০:১৫ মিনিটে সবাই ক্লাসে যায়, জয়াও যায়। জয়া কাউকে চেনে না। তাই সে একাই এক টেবিলে বসে। আদিত্য স্যার ক্লাসে যাই, এক এক করে ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে পরিচিত হয়। স্যার জয়াকে বলে, তুমি একা বসে আছো কেন? জয়া হাসে, কিছু বলে না। স্যার আশা নামের একটি মেয়েকে ডাকে। তাকে বলে, তুমি জয়াকে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দাও এবং তোমরা জয়াকে সাথে নিয়ে ঘুরবে। তোমাদের একজন বন্ধু করে নাও জয়াকে। আশা জয়াকে ছাদে নিয়ে যায়। তৃষা, পলি, সাথী, কাকুলি এবং রাজের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়। …………………………………… প্রথম পর্ব পড়তে ক্লিক করুন দ্বিতীয় পর্ব পড়তে ক্লিক করুন তৃতীয় পর্ব পড়তে ক্লিক করুন চতুর্থ পর্ব পড়তে ক্লিক করুন পঞ্চম পর্ব পড়তে ক্লিক করুন শেষ পর্ব পড়তে ক্লিক করুন …………………………………… অতৃপ্ত ভালবাসাভালবাসার গল্পলেখিকা নাজনীন সংবাদটি ১০৭৫ বার পড়া হয়েছে আপনার মতামত লিখুন : আরও পড়ুন “হরিষে বিষাদ” আজ বিশ্ব ভালোবাসা দিবস: কেন এই ভালোবাসা দিবস?