পাটকেলঘাটায় পুত্র ও পুত্রবধুর নির্যাতনে আশ্রয়হীন অসহায় বৃদ্ধার ঘরে ফেরার আকুতি

প্রকাশিত: ৪:৪১ অপরাহ্ণ, জুন ২২, ২০২০ | আপডেট: ৫:২৪:অপরাহ্ণ, জুন ২২, ২০২০
সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটায় নিজের পুত্র এবং পুত্রবধূর  হাতে নির্যাতনের শিকার হয়ে এক  অসহায় মা ঘরে ফেরার আকুতি জানিয়েছেন সমাজের  সুধী- জনদের কাছে।  ঘটনাটি ঘটেছে থানার খলিষখালী ইউনিয়নের বারানগর গ্রামে।  নির্যাতনের শিকার ঐ গ্রামের  হারান চক্রবর্তীর মাতা শান্তিলতা চক্রবত্তী(৭০)। এই ঘটনায় স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে শাস্তির দাবিও জানিয়েছে ।
 
ঘটনার বিবরনে জানা যায়, তিন কন্যা এক পুত্রকে নিয়ে শান্তিলতা দেবীর সংসার ছিল। ২০ বছর পূর্বে তার স্বামী মারা যায়। এর মধ্যে তার তিন কন্যার বিয়েও হয়ে যায়। অত:পর কয়রা নিবাসী শিবানী চক্রবর্ত্তীর সহিত তার একমাত্র পুুুুত্র হারান চক্রবর্তী  বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বিবাহের তিন বৎসর পর হারান ও  শিবানীর কোলজুড়ে ১ম  পুত্র সন্তানের জন্ম নেয়।
 
অত:পর থেকে শিবানীর আসল রূপ বেরিয়ে আসে। সে তখন কথায় তার শাশুড়িকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া সহ নানা রকম অত্যাচার চালিয়ে আসছিল। তার এই কাজে সহায়তা করত শান্তিলতার একমাত্র পুত্র হারান। এই নিয়ে বেশ কয়েক এলাকায় শালিশ হলেও সেটা বেশিদিন ফলপ্রসূ হয়নি। গত এক সপ্তাহ আগে হারান ও তার স্ত্রী পুনারায় তার বৃদ্ধা মাকে  বাড়ি থেকে বের করে দেন। কোন উপায়  না দেখে তিনি ছোট মেয়ে বৃত্তিকা চক্রবর্তীর বাড়ি কলোরায়া উপজেলার জয়নগরে আশ্রয় নেন।
 
বৃত্তিকা চক্রবর্তীর স্বামী তারক চক্রবর্তী জানান, আমি এ নিয়ে আরার বড় শালা হারানকে বার বার নিষেধ করেছি, শেষ বয়সে বৃদ্ধা মায়ের উপর অত্যাচার না করার জন্য। কিন্তু তারা কোন কথাই কর্ণপাত করে না। আমার শাশুড়ি এখন খুবই অসুস্থ। সে কানে শুনতে পায় না। এছাড়াও তার নানা সমস্যা  রয়েছে।
 
আমি এ বিষয়টা নিয়ে খলিষখালী ইউপি চেয়ারম্যান সহ ঐ ওয়ার্ডের মেম্বরকে বার বার জানিয়েও কোন ফল পাইনি। আমি এখন সাংবাদিকদের মাধ্যমে সমাজের সুধীজনদের কাছে এ রকম কু-সন্তানের বিচার চাই।  
 
বিষয়টা নিয়ে সোমবার(২২জুন) সরেজমিনে হারান চক্রবত্তীর বাড়িতে গেলে, তার স্ত্রী শিবানী চক্রবর্তী জানায়, এসমব মিথ্যা বানোয়াট কথাবার্তা। আর আমার ননদ সম্পত্তির ভাগ পেতে শাশুড়িকে নিয়ে এ ধরনের খেলায় মেতেছে। আমার শাশুড়ির মাথা খারাপ হয়ে গেছে।  আমি তাকে কোন সময় বাড়ি থেকে বের করে দিইনি। সে নিজেই রাগ করে এদিকে ওদিকে চলে যায়। আর আমাদের নামে বিচার বসায়।
 
পরবর্তীতে হারান চক্রবর্তী মুঠোফোনে এ প্রতিবেদকে জানায়, আমার মা দীর্ঘদিন এসব পাগলামি করে বেড়ায়। এতে আমার কিছুই করা নেই। সে যা খুশি করুক। যেখানে যাক আমি তাকে আর বাড়িতে আনতে পারবো না। 
 
বিষয়টা নিয়ে খলিষখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোজাফফর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, বিষয়টি আসলে অমানবিক। আমি অতিদ্রুত এ সমস্যার সমাধান করে দিব। আমার এলাকায় এ ধরনের অপরাধ করে কেউ পার পাবে না।

আপনার মতামত লিখুন :

কিশোর কুমার। নিজস্ব প্রতিবেদক। ডেক্স