চুকনগরে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের মাটি কেটে পাচার

প্রকাশিত: ১২:০৮ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২০, ২০২০ | আপডেট: ১২:০৮:অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২০, ২০২০

চুকনগরে সদ্য খননকৃত ভদ্রা নদীর পাড় থেকে বাজার ও গ্রাম রক্ষা বাঁধের জন্য রাখা বিপুল পরিমান মাটি পাচার করে নিয়ে গেছে এলজিআরডি প্রতিমন্ত্রীর আপন ভাগ্নে পরিচয় দানকারী এক যুবলীগ নেতা। এ ঘটনায় সোমবার দুপুরে স্থানীয় এলাকার বিক্ষুব্ধ জনতা মাটি কাটা বন্ধ করে একটি স্কেভেটর আটক করে রেখেছে। ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার দুপুরে ডুমুরিয়া উপজেলার কাঁঠালতলা বাজারের আপার ভদ্রা নদীর পাড়ে।

সোহাগ মাল্টিমিডিয়া এন্ড ট্র্যাভেলস

 

জানা গেছে, গত বছর বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড খুলনার ডুমুরিয়া ও যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলার অভ্যন্তরে ১৯ কিলোমিটার এলাকায় ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে আপার ভদ্রা নদী খনন করা হয়। নদী খননের মাটি নদীর দুই পাড় জুঁড়ে রাখার ফলে নদী সংলগ্ন গ্রামগুলো বন্যা, প্রকৃতিক দুর্যোগ, জোয়ারের পানি ও বর্ষা মৌসুমে জলোচ্ছাস থেকে রক্ষা পায়। এরই মাঝে মনিরামপুর উপজেলা যুবলীগ নেতা ও এলজিআরডি প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্রাচার্য্য এর আপন ভাগ্নে পরিচয় দানকারী জনৈক পলাশ চক্রবর্তী নামে এক ব্যাক্তি পাউবোর মাধ্যমে মাটি ক্রয় করেছে মর্মে ভূয়া ট্রেন্ডারের কাগজ পত্র দেখিয়ে ডুমুরিয়া উপজেলার কাঁঠালতলা বাজার এলাকা থেকে স্কেভেটর (মাটি কাঁটা যন্ত্র) দিয়ে গত এক সপ্তাহে (রাতদিন) আধা কিলোমিটার জুঁড়ে নদীর পাড়ের বিপুল পরিমাণ মাটি কেটে নিয়ে যায়।

 

মাটি পাচারের ভূয়া কাগজ পত্র ব্যবহার করা হচ্ছে এমন সংবাদ এলাকায় প্রচার হলে, দুপুরে এলাকার সর্বস্তরের মানুষ ঘটনাস্থলে গিয়ে মাটি কাটা বন্ধ করে দেন। তারপর নদীর পাড়ে থাকা একটি স্কেভেটর আটক করেন। ইউপি সদস্য আব্দুল হালিম মুন্না, মনিরুজ্জামান রাজু কাঁঠালতলা বাজার কমিটির সভাপতি আব্দুল আজিজ শেখ এবং সাধারণ সম্পাদক রায়হান মোড়ল যৌথভাবে বলেন ভূয়া কাগজপত্র দেখিয়ে যুবলীগ নেতা ও প্রতিমন্ত্রীর ভাগ্নে পরিচয়দানকারী ক্ষমতাসীন দলের সহযোগী সংগঠনের স্থানীয় কতিপয় নেতার সাথে যোগসাজস করে এই মাটি পাচার করেছে।

 

এই মাটি কাটার মূল হোতা মনিরামপুরের যুবলীগ নেতা ও প্রতিমন্ত্রীর কথিত ভাগ্নে পরিচয়দানকারী পলাশ চক্রবর্তী বলেন, আমি প্রতিমন্ত্রীর ভাগ্নে। ডুমুরিয়ার আটলিয়া ইউনিয়নের আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের কয়েকজন নেতাকে জানালে তারা আমাকে মাটি কাঁটার ব্যাপারে সকল প্রকার সহযোগীতা করেছে।

 

এছাড়া কাঁঠালতলা বাজার কমিটির কয়েকজন নেতার সাথেও কথা হয়েছে বলে জানান তিনি। সত্যি কথা বলতে নদীর মাটি কাটার জন্য টেন্ডার নেয়ার চেষ্টা করছি। মামার মাধ্যমে (প্রতিমন্ত্রী) দ্রুত কাগজ পত্র পেয়ে যাবো।

 

কেশবপুর পাউবোর উপ-বিভাগীয় কর্মকর্তা মুন্সী আছাদুজ্জামান বলেন, আপার ভদ্রা নদীর মাটি কোনো টেন্ডার দেয়া হয়নি। স্থানীয়দের সহযোগীতায় মাটি কাঁটা বন্ধ করা হয়েছে। মাটি পাচারকারিদের বিরুদ্ধে আইনের আওতায় আনার প্রক্রিয়া চলছে।

 

এলজিআরডি প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্রাচার্য্য এমপি বলেন, আমার নির্বাচনী এলাকায় আমাকে অনেকেই মামা বলে ডাকে সত্য, তবে পলাশ চক্রবর্তী নামে আমার কোনো ভাগ্নে নেই। সরকারি মাটি পাচার কারীদের এলাকার মানুষ কেন আটক করলো না? আমার নাম ভাঙিয়ে অপকর্ম করলে তাকে আইনের আওতায় আসতে হবে।

 

এদিকে মাটি পাচারের প্রতিবাদে কাঁঠালতলা বাজারের ব্যবসায়ী ও স্থানীয় এলাকাবাসীর উপস্থিতিতে কাঁঠালতলা বাজারের কাঁচামাল পট্টিতে এক প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়।


আপনার মতামত লিখুন :

গাজী আব্দুল কুদ্দুস। নিজস্ব প্রতিবেদক। চুকনগর, খুলনা