চুকনগরে ছেলেকে হারিয়েও মামলাবাজ আলতাফের ভয়ে একটি পরিবার জিন্মি

প্রকাশিত: ৭:২৫ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৬, ২০১৯ | আপডেট: ৭:২৫:অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৬, ২০১৯

সোহাগ মাল্টিমিডিয়া এন্ড ট্র্যাভেলস

কয়েকটি দপ্তরে লিখিত অভিযোগ। ছোট ছেলের লেখা পড়া বন্দ।

চুকনগর(খুলনা) প্রতিনিধি:
চুকনগরে মামলাবাজ ও সন্ত্রাসী আলতাফের ভয়ে জিন্মি হয়ে পড়েছে একটি পরিবার। বর্তমানে পুরো পরিবারটি অনিশ্চয়তার মধ্যে দিয়ে দিন যাপন করছে। সময়ে অসময়ে বাড়িতে গিয়ে, বাজারে ও রাস্তাঘাটে যাকে যেখানে যেভাবে পাচ্ছে তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ মেরে ফেলার হুমকী ধামকী দিচ্ছে। এঘটনায় পরিবারের সদস্যরা নিজেদের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে কয়েকটি দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। সন্ত্রাসী আলতাফের কারণে তাকে এক পুত্রকেও হারাতে হয়েছে।
জানাযায়,কুলবাড়িয়া গ্রামের সামছের শেখের পুত্র ও এলাকার চিহিৃত মামলাবাজ নামে খ্যাত আলতাফ হোসেনের প্ররোচনায় পড়ে এ বছরের গত ৯মে বিদ্যুতের মিটার স্থানান্তর করতে গিয়ে বিদ্যুৎ স্পৃষ্টে একই গ্রামের আফসার গাজীর পুত্র আবু তাহের গর্ভবর্তী স্ত্রী ও এক সন্তান রেখে মারা যায়। এঘটনায় তাহেরের পিতা আফসার আলী গাজী বাদী হয়ে খুলনায় বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিট্রেট আদালতে আলতাফ হোসেন ও তার স্ত্রী হোসনারা বেগমকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন। এরপর থেকে মামলাবাজ আলতাফ বিভিন্ন সময়ে অসময়ে বাড়িতে গিয়ে, বাজারে, রাস্তাঘাটে যাকে যেখানে যেভাবে পাচ্ছে তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ সহ মেরে ফেলার হুমকী ধামকী দিচ্ছে। বর্তমানে হিংস্র আলতাফের ভয়ে পরিবারের সদস্যরা বাড়ি থেকে বের হতে পারছে না। জানাযায়,আফসার গাজীর কনিষ্ট পুত্র ও কাঁঠালতলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীর মেধাবী ছাত্র আবুল হায়াত গাজী গত ২৩জুন অর্ধবার্ষিকী পরীক্ষা দেয়ার জন্য রাস্তা দিয়ে স্কুলে যাওয়ার পথে কুলবাড়িয়া কমিউনিটি ক্লিনিকের সামনে আলতাফ তার গতিরোধ করে অকথ্যভাষায় গালিগালাজ দিতে দিতে দা দিয়ে কোপানোর জন্য তাকে তাড়িয়ে নিয়ে আসে। ভয়ে শিশু আবুল হায়াত পরীক্ষা না দিয়ে দৌড়ে বাড়িতে গিয়ে পালায়। এরপর থেকে ছেলেটি পরীক্ষা দেয়াতো দূরের কথা আর স্কুলে যেতেও সাহস পাচ্ছে না। বর্তমানে আলতাফের ভয়ে তার লেখাপড়া বন্দ হওয়ার উপক্রম প্রায়। এঘটনায় তিনি বাদী হয়ে ছেলেটির জীবনের নিরাপত্তার জন্য কাঁঠালতলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বরাবর একটি অভিযোগ দায়ের করেন। এরপর গত ১৯জুলাই আফসারের স্ত্রী আনোয়ারা তার ছেলের বউ আকলিমা বেগমকে নিয়ে কাঁঠালতলা বাজারে ডাক্তার দেখাতে আসে। এ সময় আলতাফ তাদের পথ রোধ করে অকথ্যভাষায় গালিগালাজ করতে করতে বলেন, যতদ্রুত পার মামলা তুলে নেও। তোমাদেরকে ১০হাজার টাকা দিচ্ছি। আর যদি মামলা তুলে না নেও। তাহলে তোমাদের কাউকে আমি বাঁচতে দেব না। এঘটনায় মনোয়ারা বেগম বাদী হয়ে ডুমুরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ বরারব একটি সাধারণ ডাইরী করেন। এছাড়া তার নামে একটি ৭ধারায় মামলাও করা হয়েছে। কিন্তু তারপরও আলতাফ আফসারের পরিবারের যাকে যেখানে যেভাবে পাচ্ছে তাকে সেখানে সেভাবে অকথ্যভাষায় গালিগালাজ, মামলা দ্রুত তুলে নেওয়ার হুমকী ও প্রয়োজনে মারতে উদাত্য হচ্ছে। একারণে বর্তমানে আলতাফের ভয়ে পুরো পরিবারটি ভয়ে ও অনিশ্চয়তার মধ্যে দিনাতিপাত করছে। এছাড়া আলতাফের বিরুদ্ধে একাধিক নিরীহ ও সম্মানিত ব্যক্তির নামে হয়রানীমূলক মিথ্যা মামলা দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এব্যাপারে আলতাফ হোসেন তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করেন। স্থানীয় ইউপি সদস্য ও যুবলীগ নেতা আব্দুল হালিম মুন্না বলেন,আমার জানা মতে আলতাফ একজন নোংড়া, বেয়াদব, হিংস্র ও নিকৃষ্ট প্রকৃতির মানুষ। সে নিজের ভাল ছাড়া অন্য কিছু বোঝে না। একারণে গত ৯মে সে আবু তাহের নামে এক নিরিহ ব্যক্তিকে ধাণ কাটার কথা বলে বাড়িতে ডেকে এনে জোরপূর্বক তাকে দিয়ে বিদ্যুতের মিটার স্থানান্তর করাতে গেলে বিদ্যুৎ স্পৃষ্টে ছেলেটি মারা যায়। বর্তমানে শোনা যাচ্ছে নিহত আবু তাহেরের পরিবারকে মামলা তুলে না নিলে বাড়ি থেকে বের হতে দেবে না এই মর্মে হুমকী দিচ্ছে। তাদের পরিবারকে বিভিন্ন স্থানে ধরে গালিগালাজ, মারধর ও মামলা তুলে নেয়াসহ হত্যার হুমকী দিচ্ছে। তাই আমি স্থানীয় ইউপি সদস্য হিসাবে উক্ত পরিবারের নিরাপত্তা এবং এই মামলাবাজ আলতাফের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।

 

 

 

সুন্দরবনটাইমস.কম/গাজী আব্দুল কুদ্দুস/চুকনগর


আপনার মতামত লিখুন :

নিজস্ব প্রতিবেদক