কেশবপুরে আমের মুকুলের ঘ্রাণে সুরভিত চারিদিক: স্বপ্ন দেখছে আম চাষীরা প্রকাশিত: ৩:০২ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২০ | আপডেট: ৩:০২:অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২০ মশিয়ার রহমান, কেশবপুর(যশোর): ফুটেছে আমের মুকুল, ছড়াচেছ সুবাসিত ঘ্রাণ। কবির ভাষায়,‘ফাল্গুনে বিকশিত কাঞ্চন ফুল,ডালে ডালে পুজ্ঞিত আমের মুকুল। বনে বনে ফুল ফুটেছে, দোলে নবীন পাতা।’ এ যেন বসন্ত জাগ্রত দ্বারে। যশোরের কেশবপুরে আম গাছগুলোতে এর মধ্যেই মুকুল আসতে শুরু করেছে। নানা ফুলের মিষ্টি ঘ্রাণে মৌ মৌ করছে প্রকৃতি। আমের মুকুলে তাই এখন মৌমাছির গুজ্ঞন। মুকুলের মিষ্টি ঘ্রাণ যেন জাদুর মতো কাছে টানছে তাদের। গাছের প্রতিটি শাখা-প্রশাখায় তাই চলছে ভ্রমের সুর ব্যজ্ঞনা। শীতে স্নিগ্ধতার মধ্যেই ছড়াচ্ছে সোনালি মুকুল। বছর ঘুরে আবারও তাই ব্যকুল হয়ে উঠেছে আম প্রেমিদের মন। এবার সময়ের আগে সোনালি মুকুলে ভরে গেছে কেশবপুর অঞ্চলের আম বাগান। মুকুলের ভারে নুয়ে পড়েছে আমের শাখা। মুকুলের মৌ মৌ গন্ধে সোনলি স্বপ্নে ভাসছেন আম চাষীরা। বাগানের সারি সারি গাছে ঝুলছে আমের মুকুল। সুরভিত মুকুলের গন্ধ পাল্টিয়ে দিয়েছে এ অঞ্চলের বাতাস। তাই দক্ষিনা বাতাসে দোল খাচ্ছে আম চাষীর স্বপ্ন। আসার আলো জ্বালিয়েছে আম বাগানের মালিক ও ব্যবসায়ীদের মনে। বৃহস্পতিবার কেশবপুরের ১১টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার কয়েকটি আম বাগান ঘুরে দেখা গেছে, গাছে গাছে নানা ফুলের সঙ্গে আমের মুকুলের মিষ্টি ঘ্রাণ আকাশে বাতাসে মৌ মৌ গন্ধে মাতোয়ারার করে তুলেছে। থোকায় থোকায় হলুদ রঙ্গের মুকুল ও গুটি আম দেখে ইতোমধ্যে ব্যবসায়ীরা বাগানে দরদাম হাঁকাচ্ছে। আর বাগানের মালিকেরা আমের ভালো ফলন পেতে ছত্রাক নাশক প্রয়োগসহ বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ততার সময় পার করছেন। আম চাষীরা খুশি হলেও কৃষি কর্মকর্তা বলেন,শীত বিদায় নেয়ার আগেই আমের মুকুল আসা ভালো নয়। কেশবপুরে প্রধান প্রধান আমের আবাদ হচ্ছে, আমরুপালি, ফজলি, মল্লিকা, লেংড়া, হিমসাগর, হাড়িভাঙ্গা, গোপালভোগ,বারি ১০, বেনারসি সিতাভোগ ও রসে ভরা বোম্বাই। এর মধ্যে হিমসাগর, ফজলি, লেংড়া ও আমরুপালির চাহিদা বেশি। কেশবপুর উপজেলার বাগদহা গ্রামের আম চাষী হাবিবুর রহমান বলেন, এ বছর আমার আম বাগানে প্রচুর পরিমানে আমের মুকুল আসতে শুরু করেছে। এখন পর্যন্ত মুকুলে কোনো রোগ আক্রমন করেনি। যদি কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না আসে, তাহলে আশা করছি প্রতিটি আম গাছেই পর্যাপ্ত পরিমানে আম ধরবে। উপজেলার মঙ্গলকোট গ্রামের আম বাগানের মালিক আবদুল জলিল সরদার বলেন, বাগানের অধিকাংশ গাছে এরই মধ্যে মুকুলে ছেয়ে গেছে। এবার কুয়াশা কম থাকায় মুকুল ভালোভাবে প্রস্ফিুটিত হয়েছে। গত বছর ৩ বিঘা জমিতে আমের বাগান ছিলো। যা বিক্রি করেছিলাম ৮ লাখ টাকা। এ বছর ৫ বিঘা জমিতে আমের বাগান আছে। এলাকাতে ফসলি চাষের জমি রেখে অনেকেই আম বাগান করেছে। এবার আম গাছে খুব একটা কীটনাশক প্রয়োগের প্রয়োজন হবে না। তবে ছত্রাকজনিত রোগে আমের মুকুল ও গুটি আক্রান্ত হওয়ার আশংকা থাকে। তাহলে বাগানে দুইদফা ছত্রাকনাশক স্প্রে করতে হবে। মধ্যকুল গ্রামের আম বাগানের মালিক শাহীনুর রহমান বলেন, আম চাষে সহজেই লাভবান হওয়া যায়। যার কারণে অনেকেই এ পেশায় এগিয়ে আসছেন। আমের ফলন পেতে আমরা কৃষকরা বিভিন্ন সংগঠন থেকে পরামর্শ নিচ্ছি। আসা করা যায় গত বছরের থেকে এ বছর আমের উৎপাদন বেশি হবে। আমি গত বছর ১ বিঘা জমিতে আমের চাষ করেছিলাম। যা বিক্রি করেছিলাম ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এ বছর দেড় বিঘা জমিতে আমের চাষ করেছি। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মহাদেব চন্দ্র সানা বলেন, গত বছর থেকে এ বছর কৃষকরা আম চাষের দিকে ঝঁকে পড়েছেন। গাছে আমের মুকুল এসেছে। বিভিন্ন এলাকায় যেয়ে আম চাষীদের মুকুল যাতে নষ্ট না হয়, সে ব্যাপারে পরামর্শ দেয়া অব্যাহত রয়েছে। সুন্দরবনটাইমস.কম/নিজস্ব প্রতিবেদক সংবাদটি ৪৬৫ বার পড়া হয়েছে আপনার মতামত লিখুন : আরও পড়ুন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সামাজিক সংগঠনের ছবি ব্যবহারের প্রতিবাদ সাতক্ষীরায় বৃদ্ধি পেয়েছে জনপ্রিয় পানি ফলের চাষ