আজও ইতিহাসের স্বাক্ষ্য দেয় কপিলমুনির ঐতিহ্যবাহী বেদ মন্দির

প্রকাশিত: ১০:২৪ অপরাহ্ণ, আগস্ট ৭, ২০১৯ | আপডেট: ১০:৪৪:অপরাহ্ণ, আগস্ট ৭, ২০১৯


এইচ এম এ হাশেম, কপিলমুনি সংবাদদাতা:
কপিলমুনির বেদ মন্দিরটি উপমহাদেশের দক্ষিণ-পূর্বকোণে অবস্থিত বাংলাদেশের একটি ঐতিহাসিক পবিত্র বেদ মন্দির। যা বাংলাদেশে বিরল বলে মনে করেন স্থানীয়রা। মন্দিরটি ঘিরে রয়েছে অনেক ইতিহাস, রয়েছে অনেক ঐতিহ্য।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, সে সময় পূজা অর্চনা করার উল্লেখযোগ্য কোন মন্দির ছিল না। স্বর্গীয় রায় সাহেব বিনোদ বিহারী সাধু বৃহত্তর কপিলমুনি অঞ্চলের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বৈদিক ধর্ম প্রচার ও শিক্ষা দানের জন্য বাংলা ১৩৩৮ সালের ২ কার্ত্তিক নিজ বাড়ির আঙ্গিনায় প্রতিষ্ঠা করেন সার্বজনীন বেদ মন্দির। যার দ্বারোদঘাটন করেন তৎকালীন ভারতের হিন্দু মিশনের সভাপতি শ্রীমৎ স্বামী সত্যানন্দজী মহারাজ।
বৃটিশ ভারতের রাজত্বে চার কোণে অবস্থিত বেদ মন্দিরের মধ্যে উল্লেখযোগ্য মহা পবিত্র বেদ মন্দির এটি। মন্দিরটির স্থাপত্য শৈলী লক্ষ্য করলে মনে হয়, ইরানী ও প্রাচীন ভারতীয় শৈল্পিক নৈপুন্যতা রয়েছে। আটচালা শ্বেত পাথরে নির্মিত দর্শনীয় এ মন্দিরে রয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মূল ধর্মগ্রন্থ “বেদ”। রায় সাহেব কর্তৃক সংগৃহিত বেদের সমুদয় কপি আজ এখানে নেই। ‘৭১-এ মুক্তিযুদ্ধের সময় রায় সাহেবের বাড়ীটি পাক বাহিনী দখল করে তাদের শক্ত ঘাঁটি তৈরী করে। আর সে সময় রাজাকাররা বেদের কিছু কপি নষ্ট করে ফেলে।
মন্দির প্রতিষ্ঠালগ্নে মন্দিরের ভেতরে কোন মূর্তি ছিল না, তবে বর্তমানে ভগবান বিষ্ণুর কৃষ্ণ পাথরের ৩.৫ ফুট উঁচু মূর্তি, পাথরের তৈরী রায় সাহেবের নিজ মূর্তি, রাধাকৃষ্ণ মূর্তি, নাড়– গোপালের মূর্তি ও ৪ খানা বেদ (ঋক ১৩ খন্ড, স্যাম ৫ খন্ড, যযু ৭ খন্ড, অথর্ব ৬ খন্ড) রয়েছে। অতীতে বেদজ্ঞ পন্ডিত দ্বারা বেদ পাঠ করা হতো। মন্দিরে ৩ বেলা পুজারী চিত্তরঞ্জন গোস্বামী পূজা অর্চনা করে থাকেন। রায় সাহেব বিনোদ বিহারী সাধুর জন্ম তিথিতে প্রতি বছর মন্দির প্রাঙ্গনে অষ্ট প্রহর ব্যাপী মহা নামযজ্ঞ অনুষ্ঠিত হয়।
মন্দিরের কোষাধ্যক্ষ জগদীশ দে বলেন, ‘মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা লাভের পর থেকে এলাকার হিন্দুরা অত্যন্ত শ্রদ্ধাভরে এখানে আসেন এবং প্রার্থনা করেন। ভক্তরা মন্দিরে মানত করলে নিষ্ফলা গাছে ফল ধরে, মনোবাসনা পূর্ন হয়। আমি মনে করি প্রতিষ্ঠাতা রায় সাহেবের কাছে আমরা চির কৃতজ্ঞ’।
বেদ মন্দির কমিটির সাবেক সভাপতি শ্রী চম্পক কুমার পাল বলেন, ‘কপিলমুনি বেদ মন্দির একটি দর্শনীয় ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। সারাদেশে মন্দিরটির বেশ পরিচিতি রয়েছে। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হলো, মন্দিরে বেশ পূর্বে ১বার মাত্র সরকারী অনুদান পেয়েছি। সরকারের পক্ষ থেকে ২য় বার আর খোঁজ নেওয়া হয়নি, মন্দিরটির উন্নয়ন ও আসবাবপত্র ক্রয়ের জন্য সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছি’।

সোহাগ মাল্টিমিডিয়া এন্ড ট্র্যাভেলস

 

 


আপনার মতামত লিখুন :

নিজস্ব প্রতিবেদক