ভালবাসার গল্প: “অতৃপ্ত ভালবাসা” (পর্ব-৫) প্রকাশিত: ১২:৪৩ পূর্বাহ্ণ, জুন ২৪, ২০২০ | আপডেট: ১২:৫৯:পূর্বাহ্ণ, জুন ২৪, ২০২০ মিনিট দশেক পরে পেছন থেকে রাজ জুলিয়েট বলে ডাক দেয় জয়া রিক্সা থামায়। জয়া: কি হলো? রাজ: নামো, কথা আছে। জয়া: কি কথা? রাজ: খুব খারাপ কথা। জয়ায় মুখ গভীর হয়ে যায়। রাজ রিক্সাটা ছেড়ে দেয়। জয়া রাস্তার পাশে যেয়ে দাঁড়ায়। রাজ ও রোহিত জয়ার সামনে যেয়ে দাঁড়ায়। জয়া রোহিতের দিকে তাকায়। রোহিতও জয়ার দিকে তাকায়। রাজ: তোরা ভিতরের রাস্তায় যেয়ে দাড়া। আমি আসছি। জয়া ও রোহিত একটা গাছের নিচে দাঁড়ায়। জয়া মাথা নিচু করে থাকে। রোহিত: আমার এই ২০ বছর বয়সের জীবনে তোমার মতো লাজুক মেয়ে কখনো দেখিনি। তবে এটা সত্য লজ্জা তোমার সৌন্দর্যকে আরও অনেক বেশি গাড়ো করে দেয়। জয়া হাসে। রোহিত: জয়া আমার দিকে একটু তাকাও। জয়া: পারবো না। রোহিত: একবার। জয়া মুখ তুলে তাকায়। রোহিতের চোখে চোখ পড়ে। জয়ার বুকের ভেতর ভালবাসার ঝড় তোলে রোহিত সেই দৃষ্টি। রোহিত: তোমার ঠোঁটে কি জয়া? জয়া: কোথায়? রোহিত একটা আঙ্গুল দিয়ে বলে এখানে। জয়া চোখ বন্ধ করে অন্তর দিয়ে অনুভব করে রোহিতের সেই স্পর্শ। রোহিতের চোখ দুটোও বন্ধ থাকে। রাজ: এখানে কি হচ্ছে? জয়া ও রোহিত চোখ খুলে। রোহিত: তোমার হাতটা বাড়াও। জয়া তার ডান হাতটা রোহিতের দিকে বাড়ায়। রোহিত জয়ার হাতে অনেকগুলো চকলেট দিয়ে কিছু সময়ের জন্য জয়ার হাতটা ধরে রাখে। এই প্রথম রোহিত জয়াকে দুই বার স্পর্শ করে। যে স্পর্শে ক্ষণিকের জন্য তারা দুজনে অস্থির হয়ে যায়। প্রথমবার জয়ার ঠোঁটে, আর দ্বিতীয়বার জয়ার হাতে। রাজ: রোমিও এবার তুমি যাও। আমি আমার জুলিয়েট এর সাথে কথা বলবো। রোহিত: জয়া ভালো থেকো। কাল দেখা হবে। কাল তাড়াতাড়ি কলেজে আসবে। জয়া: আচ্ছা। রোহিত চলে যায়। ওর যাওয়ার পথে জয়া ও রাজ তাকিয়ে থাকে। রোহিত কখনো পিছে ফিরে তাকায় না। সেদিন পিছে ফিরে তাকায়। জয়া ও রাজ হাসে। রোহিত দূর থেকে চিৎকার করে বলে, জয়া কাল তাড়াতাড়ি কলেজে এসো কিন্তু। জয়া হ্যাঁসূচক মাথা নাড়ে। রাজ: এবার চলো হাঁটা যাক। জয়া: হেঁটে কোথায় যাবো? রাজ: তোমার বাসার দিকে। জয়া: যদি কেউ দেখে ফেলে? রাজ: প্রেম করতে গেলে এত ভয় পেলে চলে না। জয়া: কে প্রেম করছে? রাজ: আমরা দু’জন। জয়া হাসে। তারা হাঁটতে থাকে। রাজ: তোমাকে যা বলি মন দিয়ে শোনো। জয়া: বলো? রাজ: তুমি কি রোহিতকে ভালবাসো? জয়া: জানি না। রাজ: যদি তুমি রোহিতকে ভালবাসো, তবে কাল কলেজে শাড়ি পড়ে আসবে। তাহলে রোহিত বুঝবে তুমি রোহিতকে ভালবাসো। তোমাকে আর কিছুই করতে হবে না। যা করার রোহিতই করবে। আর কালো রঙের টিপ পরবে। গোলাপি লিপস্টিক, আর চুলগুলো ছেড়ে দিবে। এগুলো সব রোহিতের কথা। জয়া: আমি শাড়ি পরতে পারি না এবং কখনো পরিনি। আর আম্মু শাড়ি পরে আসতে দিবে না। রাজ: কাল তৃষা, কাকুলি, সাথী ওরা সবাই শাড়ি পরে আসবে। আর তোমার বর পাঞ্জাবি পরে আসবে। জয়া: চেষ্টা করবো। রাজ: সে আমি জানি। আমার আর কি? আমার জুলিয়েট অন্যের হয়ে গেল। জয়া হাসে। রাজ: তাহলে জুলিয়েট তুমি বাসায় যাও। কাল খুব সুন্দর করে সাজবে। জয়া: ঠিক আছে। জয়া বাসায় চলে যায়। বাসায় যেয়ে জয়া মামনিকে সব খুলে বলে। মামনি: আমি ভাবিকে রাজি করাবো শাড়ি পরার জন্য। পরের দিন খুব সকালে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে জয়া মামুনির রুমে যায়। মামনি তাকে সাজিয়ে দেয়। জয়া লাল শাড়ি পরে। সাজা শেষ করে জয়া বাইরে এসে দাঁড়ায়। জয়: আপু তোমাকে পরীর মত দেখাচ্ছে। মনে হচ্ছে আজ তোমার বিয়ে। মামনি: সত্যি তোকে নববধূর মত দেখাচ্ছে। আম্মু: তোরতো মানুষের নজর লাগবে। জয়: আপু তুমি এত খুশি কেন? আম্মু: আমিও তাই বলি। মামনি: আপনাদের জন্য মেয়েটা একটু হাসতেও পারবে না। আম্মু: আমি আল্লাহর কাছে চাই, জয়া সারাজীবন একইভাবে হেসে যাক। হাসি যেন কখনো ওর ঠোঁট থেকে আলাদা না হয়। পাপা জয়াকে রিক্সায় তুলে দেয়। জয়া রিক্সায় বসে ভাবতে থাকে, একটু পরেই সে রোহিতের সামনে যেয়ে দাঁড়াবে। জয়ার চোখ দুটি বন্ধ থাকবে। রোহিত তাঁকে জড়িয়ে ধরবে বুকের মাঝে। রোহিত বলবে যে, আমি তোমাকে অনেক বেশি ভালোবাসি। জয়া আর ভাবতে পারে না। তার লজ্জা করে। কলেজ গেটে পৌঁছে জয়া দেখে অনেক লোক কলেজের সামনে। সবাই চিৎকার করছে, ছোটাছুটি করছে। জয়া রিক্সা থেকে নেমে এক পাশে দাঁড়ায়। …………………………………… প্রথম পর্ব পড়তে ক্লিক করুন দ্বিতীয় পর্ব পড়তে ক্লিক করুন তৃতীয় পর্ব পড়তে ক্লিক করুন চতুর্থ পর্ব পড়তে ক্লিক করুন পঞ্চম পর্ব পড়তে ক্লিক করুন শেষ পর্ব পড়তে ক্লিক করুন …………………………………… অতৃপ্ত ভালবাসাভালবাসার গল্পলেখিকা নাজনীন সংবাদটি ৭২৩ বার পড়া হয়েছে আপনার মতামত লিখুন : আরও পড়ুন “হরিষে বিষাদ” আজ বিশ্ব ভালোবাসা দিবস: কেন এই ভালোবাসা দিবস?