সাতক্ষীরায় দুপুর পযর্ন্ত ৮৫ হাজার মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন

প্রকাশিত: ৩:৫৭ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ৯, ২০১৯ | আপডেট: ৩:৫৭:অপরাহ্ণ, নভেম্বর ৯, ২০১৯

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা:
ঘূর্ণিঝড় বুলবুল এর প্রভাব সাতক্ষীরা জেলায়ও ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত চলছে। এই ঘোষণার পর থেকেই সক্রিয় হয়ে উঠেছেন স্থানীয় দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির লোকজন। জেলা নিয়ন্ত্রন কক্ষ জানা গেছে, আজ শনিবার দুপুর ২ টা পযর্ন্ত ৮৫ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন।
মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যেতে শ্যামনগর কালিগঞ্জ ও আশাশুনিসহ জেলার সকয়টি উপজেলার গ্রামে গ্রামে মাইকিং চলছে। দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির লোকজনের পাশাপাশি সাতক্ষীরা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স,জেলা পুলিশ বিভিন্ন এলাকায় লোকজনদের আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য মাইকিং করছেন। পুলিশও রয়েছে সতর্ক অবস্থায়।

সোহাগ মাল্টিমিডিয়া এন্ড ট্র্যাভেলস

এদিকে, টানা বৃষ্টি উপেক্ষা করে সকাল থেকেই সাতক্ষীরা-৪ আসনের সংসদ সদস্য এসএম জগলুল হায়দার, শ্যামনগর উপজেলা চেয়ারম্যান এসএম আতাউল হক দোলন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান উপকূলীয় দ্বীপ ইউনিয়ন গাবুরা, পদ্মপুকুর, বুড়িগোয়ালিনী, মুন্সীগঞ্জসহ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় গিয়ে সাধারণ মানুষকে সাইক্লোন সেল্টারে নেওয়ার তৎপরতা চালাচ্ছেন।
একই সাথে দ্বীপ ইউনিয়ন গাবুরা ও পদ্মপুকুরের মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে আনার জন্য জেলা প্রশাসনের নির্দেশনায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে চারটি বাসও দেওয়া হয়েছে। উপকূলীয় এলাকায় অনবরত চলছে মাইকিং। প্রতিটি এলাকায়ই তোলা হয়েছে সতর্কতামূলক ফ্লাগ।
কালিগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদী ও ইউএনও মোজাম্মেল হক রাসেল এবং শনিবার ভোর থেকে তালার ইউএনও ইকবাল হোসেন এলাকায় এলাকায় গিয়ে সাধারণ মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার অনুরোধ করছেন।
শ্যামনগর উপজেলার গাবুরার গাবুরা, হরিশখালী, নাপিতখালী, জেলেখালী, বুড়িগোয়ালীনির দুর্গাবটি পোড়াকাটলা, ভামিয়া ও দুর্গাবাটি এলাকার বেড়িবাঁধ মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এছাড়া কৈখালীর বিভিন্ন অংশ এবং কাশিমাড়ী ও দাতিনাখালীসহ পদ্মপুকুরের কয়েকটি অংশের বাঁধের দুরাবস্থাও চরমে। বাঁধ ভেঙে জলোচ্ছ্বাসের আশংকায় রয়েছে এলবাবাসী।
এদিকে, দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে ও মানুষের জানমালের নিরাপত্তায় উপকূলীয় এলাকায় সমন্বিতভাবে কাজ করছে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, নৌ বাহিনী ও কোস্টগার্ড।

কোস্টগার্ডের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, সুন্দরবনের মধ্যে এবং লোকালয় থেকে বিচ্ছিন্ন একমাত্র গ্রাম গোলাখালী থেকে ৬৮৫জন মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে আনা হয়েছে।

সাতক্ষীরা জেলা দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক এসএস মোস্তফা কামাল জানান, এরই মধ্যে ২৭০ টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়া ১২৫২ টি স্কুল কলেজ মাদ্রাসা ফাঁকা রাখা হয়েছে। উপকুলীয় ইপজেলা শ্যামনগর,আশাশুনি ও কালিগঞ্জ উপজেলার প্রত্যন্ত এলকার জনগনকে বেলা ১১ টার মধ্যে আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে আনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দুর্যোগ কবলিতদের সহায়তায় ৩১০ মেট্রিক টন চাল, নগদ ৫ লাখ ৪২ হাজার টাকা, ২ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার, ২৭ হাজার পিস পানি বিশুদ্ধকরন ট্যাবলেট, পর্যাপ্ত ওষুধপত্র মজুদ রাখা হয়েছে। এছাড়া ২২ হাজার স্বেচ্ছাসেবকসহ ৮৫ টি মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়া শিশুদের জন্য ১ লাখ টাকা ও গবাদি পশুর জন্য আরো ১ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। উপকূলীয় উপজেলাগুলিতে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে স্ব স্ব এলাকায় মাইকিং করে জনগনকে নিরাপদে থাকতে বলা হয়েছে।

 

 

সুন্দরবনটাইমস.কম/শা:/সাতক্ষীরা


আপনার মতামত লিখুন :

নিজস্ব প্রতিবেদক