সদ্য নির্মাণ করা ধলবাড়িয়া টু কলাপোতা সড়কটি মাস না যেতেই ভেঙ্গে বেহাল দশা

প্রকাশিত: ৯:৩২ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০১৯ | আপডেট: ৯:৩২:অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০১৯

ডেক্স রিপোর্ট:
সদ্য নির্মাণ করা ধলবাড়িয়া টু কলাপাতা সড়কটি মাস না যেতেই ভেঙ্গে বেহাল দশা। সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার ধলবাড়িয়া-কলাপাতা সড়কটির সদ্য নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। এক মাস আগে এই সড়ক নির্মাণের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান খুলনার এফ কে ট্রেডার্সের মালিক জনাব সোহেল হোসেন এলজিইডিকে চিঠি দিয়ে নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে বলে জানায়।

সোহাগ মাল্টিমিডিয়া এন্ড ট্র্যাভেলস

অথচ সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ধলবাড়িয়া থেকে কলাপাতা যেতে কয়েক স্থানে পিচের সোলিং নষ্ট হয়ে খাদে পরিণত হয়েছে। যথাযথ প্রযুক্তি ব্যবহার না করে অপরিকল্পিতভাবে নিম্নমানের খোয়া ও পর্যাপ্ত বালি এবং খোয় না দিয়ে কাঁদার উপর বিটুমিন দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করায় এ অবস্থা হয়েছে বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, কলাপাতা স্কুলের পূর্ব পাশের পুকুরের পাড় ভেঙ্গে অর্ধেক রাস্তা পুকুরে ধসে পড়েছে।

এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা মো: মনিরুল ইসলাম এই প্রতিনিধিকে জানান, রাস্তার কাজ নির্মাণের সময় আমরা দূর্নীতির বিষয়ে প্রতিবাদ করিলে কথিত ঠিকাদার আমাদেরকে জেল হাজত খাটানোর হুমকি প্রদান করে। কথিত রাস্তা নির্মানে প্রচুর দূর্নীতি হওয়ায় স্থানীয় মো: আনারুল ইসলাম সহ ১৫ জন স্থানীয় আম জনতা সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ করিলে মাননীয় জেলা প্রশাসক জনাব এস এম মোস্তফা কামাল জরুরী ভিত্তিতে এলজিইডি এর নির্বাহী প্রকৌশলিকে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। এ বিষয়ে সরেজমিনে তদন্তকালে দেখা যায় ধলবাড়িয়া থেকে ১০০ গজ দুরে জনাব মোতালেব সাহেবের বাড়ির সামনে একটি বিচলি বোঝায় ইঞ্জিন ভ্যান রাস্তার উপর খাদে কাত হয়ে পড়ে আছে। ভ্যানের ড্রাইভার কে জিজ্ঞাসা করিলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ঠিকাদারকে গালিগালাজ করতে থাকে।

জনাব মোতালেব সাহেবের স্কুল পড়–য়া কন্যা মার্জিয়া (১৩) এ প্রতিনিধিকে জানান, রাস্তার বর্তমান অবস্থা এতই নাজুক আমাদের স্কুলে যেতে কাপড় চোপড় নোংরা অবস্থায় যেতে হয়। রাস্তা করার সময় গ্রামবাসিরা বাধা দিতে গেলে ঠিকাদার সকলকে শাসিয়ে যায় এবং পুলিশকে দিয়ে হয়রানি করে। সুভাষিনি মাদ্রাসার শিক্ষিকা স্মৃতি রানি বলেন, আমি নিয়মিত এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করি কিন্তু সদ্য তৈরী এ রাস্তাটি নির্মানে ঠিকাদার এতই দূর্নীতি করেছে এক মাসের মধ্যেই রাস্তাটি খানা খন্দে পরিণত হয়েছে। আমাকে প্রায় এ ২ কি: মি: রাস্তাটি পায়ে হেটে কর্দমাক্ত অবস্থায় স্কুলে পৌছাতে ভিষণ কষ্ট হয়। স্থানীয় বাসিন্দা ওজিয়ার রহমান জানান, এ রস্তাটির নির্মানে ব্যপক অনিয়মের কারণে ভাইপো আনারুল ও মেম্বর শহিদুল বাধা দিতে গেলে তাদেরকে জেল খাটানোর ভয়ভীতি দেখান। ঠিকাদার সোহেল হোসেন এ বিষয়ে জানান, আমি সিডিউল অনুযায়ী এ রাস্তার কাজ শেষ করে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে বুঝে দিয়েছি। তবে স্থানীয় কতিপয় চিহ্নিত কর্তা ব্যক্তিরা আমাকে কাজের সহযোগীতা তো দূরের কথা চাঁদার দাবি করলে তা না দেওয়ায় আমার বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লেগেছে। তারা ইনটেনশানালি দশ চাকার বালুর ট্রাক ঢুকিয়ে রাস্তাটি নষ্ট করেছে।

এমনকি উনারা নেগেটিভ সোলোভের মাটি কাটতে দেয়নি। কথিত ঠিকাদার তালা উপজেলা প্রকৌশলির বন্ধুবর হওয়ায় দাপটের সঙ্গে দূর্নীতি করে গেছেন বলে এলাকাবাসী এ প্রতিনিধিকে জানায়। এ বিষয়ে তালা উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলি আবু সাঈদ মো: জসিম কে প্রশ্ন করিলে তিনি জানান, দেড় বছরের ভিতরে কোন রাস্তার সমস্যা হলে ঠিকাদার ঠিক করে দেবে এবং ধলবাড়িয়া-কলাপাতা রোডের বেহাল অবস্থা আমার অবগত হয়েছে।

বৃষ্টির মৌসুম শেষে ঠিকাদার ক্ষতস্থানগুলো পুনরায় নির্মাণ করে দেবে। এ বিষয়ে সাতক্ষীরা জেলা নির্বাহী প্রকৌশলি বিশ্বজিত কুমার কুন্ডু এ বিষয়ে ঠিকাদারের দূর্নীতি সত্যতা স্বীকার করে বলেন, উক্ত ঠিকাদারকে এ বিষয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে আগামী শুকনা মৌসুমে ঠিকাদার রাস্তা ঠিক করে দেবে বলে আশ্বাস দেন।

 

 

সুন্দরবনটাইমস.কম/নাজমুল হক খান/পাটকেলঘাটা/সাতক্ষীরা


আপনার মতামত লিখুন :

নিজস্ব প্রতিবেদক