বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির সামনে ইউএনও’র হাসিমুখে ফটোসেশান

প্রকাশিত: ৮:০৩ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১৬, ২০১৯ | আপডেট: ৮:০৩:অপরাহ্ণ, আগস্ট ১৬, ২০১৯

সোহাগ মাল্টিমিডিয়া এন্ড ট্র্যাভেলস

কপিলমুনি(খুলনা) প্রতিনিধি :
খুলনার পাইকগাছায় জাতীয় শোক দিবস অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির সামনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জুলিয়া সুকায়না হাস্যোজ্জল ফটোসেশানের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সমালোচনার ঝড় বইছে।
১৫ আগস্ট বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলা পরিষদ চত্বরে স্থাপিত বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির সামনে হাসিমুখে ফটোসেশান করতে দেখা যায়। এমনকি শোক র‌্যালিতেও হাসাহাসি করতে দেখাযায়। ছবিতে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির সামনে পুষ্পস্তবক অর্পন ও শোক র‌্যালিতে দেখা যাচ্ছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জুলিয়া সুকায়না, সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মিহির বরণ মন্ডল ও অন্যান শিক্ষক, পাইকগাছা স্বেচ্ছা সেবক লীগের সভাপতি তৃপ্তি রঞ্জন সেন, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (ডি-সার্কেল) আছাদুজ্জামান আসাদ, লোনা পানি মৎস্য গবেষণা কেন্দ্রের মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোঃ লতিফুল ইসলাম, ওসি এমদাদুল হক শেখ প্রমুখ। অন্যান্যরা ভাবগম্ভীর অবস্থায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি পুষ্পঅর্ঘ্য নিবেদন ও শোক র‌্যালি করেন। অথচ বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির সামনে ও র‌্যালিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, স্বেচ্ছা সেবক লীগের সভাপতি, মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, সরকারি কলেজের এক শিক্ষককে হাসাহাসি করতে দেখা যায়। ছবিতে মনে হচ্ছে নির্বাহী কর্মকর্তা মুচকি হেসে অন্যদের ফটোসেশানে উৎসাহ দিচ্ছেন। নির্বাহী কর্মকর্তার হাসিমুখ জাতীয় শোক দিবস পালনের ছবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে নিন্দা ও সমালোচনার ঝড় বইছে। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা শেখ ইকবাল হোসেন খোকন ফেসবুকে মন্তব করেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করার দৃশ্য কেন এমন হয়!!..। পলাশ কর্মকার …এমন ফটোসেশন বাঙালী দেখতে চায় না…। জিএম মিজানুর রহমান শোক না ওনারা ফটোসেশন করছে আনন্দে তাই বলা হচ্ছে নাকি? নিশিত মিস্ত্রি শোকাহত হয়নি তাই হাস্যোজ্জ্বল এ দৃশ্যটি?
সমকাল পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার ফসিহ উদ্দীন মাহতাব তার ফেসবুক আইডিতে মন্তব্য করেছেন-১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নরপিচাশরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুসহ সপরিবারে হত্যা করে। জাতির মহান নেতাকে হারিয়ে আমরা শোকাহত। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দেশ স্বাধীন না হলে কেউ মন্ত্রী, এমপি, অফিসার, সাংবাদিক বা অন্য কোনও কিছু হতে পারতাম না। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকান্ডের দিনটি (১৫ আগস্ট) জাতীয় শোক দিবস ঘোষণা করেছে বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার। দিবসটি দেশব্যাপি জাতি গভীর শোকের মধ্য দিয়ে পালন করেছেন। অথচ খুলনা জেলার পাইকগাছা উপজেলা প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা শোক নয়, যেন হাস্যোজ্জল (দায়সারা) বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেছেন। স্থানীয় এক সাংবাদিকের ফেসবুকে ছবিসহ মন্তব্যও লেখা হয়েছে। বিষয়টি খুবই বেদনার ও অমার্জনীয়। স্থানীয় সাবেক সাংসদ ও মুক্তিযোদ্ধা সোহরাব আলী সানাসহ অনেকেই বিরুপ মন্তব্য করেছেন। দয়া করে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী, মুখ্যসচিব, জনপ্রশাসন সচিব ও এপিডি মহোদয় বিষয়টি দেখবেন কি?
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জুলিয়া সুকায়নার পাইকগাছায় যোগদান পর হতে একের পর বির্তকিত কর্মকান্ড করে আলোচনা-সমালোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে পরিণত হয়েছেন। উপজেলা পরিষদের প্রাচির নির্মাণকে কেন্দ্র করে তার বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে। পাইকগাছা সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে মেয়র সেলিম জাহাঙ্গীর বাদী হয়ে পৃথক ২টি মামলা করেছেন, মামলা নং ৫৫/১৮ ও ১৩/১৯। প্রেসক্লাব পাইকগাছা সভাপতি প্রকাশ ঘোষ বিধান অভিযোগ করেন তথ্য অধিকার আইনে অথ্য পাওয়ার জন্য তার কাছে আবেদন করলেও তিনি তথ্য প্রদান করেন না। এছাড়া খুলনা বিভাগী কমিশনারের কাছে অভিযোগ দিয়েছেন বলে ওই সাংবাদিক নেতা জানান।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জুলিয়া সুকায়না ফেসবুকে হাসিমুখে ফটোসেশান বিষয়টি অস্বীকার করে জানান, ‘র‌্যালিতে হাসাহাসি বিষয় মনে পড়ে না, র‌্যালিতো হাসার জিনিস। আপনি কি ভাবে নিবেন সেটা আপনার ব্যক্তিগত বিষয়।’

 

 

সুন্দরবনটাইমস.কম/এইচ এম এ হাশেম/কপিলমুনি


আপনার মতামত লিখুন :

নিজস্ব প্রতিবেদক