প্রধানমন্ত্রীর গাড়ি বহরে হামলা মামলায় সাফাই সাক্ষী দিবেন রুহুল কবীর রিজভি প্রকাশিত: ৮:৪৮ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৩০, ২০২০ | আপডেট: ৮:৪৮:অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৩০, ২০২০ সাতক্ষীরার কলারোয়ায় তৎকালিন বিরোধী দলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলা মামলায় বৃহষ্পতিবার (৩১ ডিসেম্বর) বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবীর রিজভির সাফাই সাক্ষী গ্রহণ ও যুক্তিতর্কের জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে। বুধবার সাতক্ষীরা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক হুমায়ুন কবীরের আদলতের তিনজন সাফাই সাক্ষী গ্রহণ শেষে এ আদেশ দেন। অতিরিক্ত এটর্ণি জেনারেল এসএম মুনীর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। সাফাই সাক্ষী দাতারা হলেন, কলারোয়া উপজেলার গদখালি গ্রামের রহিম বক্স মোড়লের ছেলে মোবারক আলী মোড়ল, সাতক্ষীরা শহরের কাটিয়া মাষ্টার পাড়ার শাহজাহান কবীরের ছেলে সিটি কলেজের প্রভাষক মনিরুজ্জামান মনি ও তালা মেলা বাজারের শেখ তয়জদ্দিনের ছেলে ও তালা মহিলা কলেজের উপাধ্যক্ষক শেখ শফিকুল ইসলাম। তারা যথাক্রমে আসামী গোলাম রসুল, তামিম আজাদ মেরিন ও রকিব মোল্লার পক্ষে সাক্ষী দেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানীতে অংশ নেন বাংলাদেশের অতিরিক্ত এটর্ণি জেনারেল এসএম মুনীর, ডেপুটি এটর্ণি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জী, সহকারি এটর্ণি জেনারেল শাহীন মৃধা ও সাতক্ষীরা জজ কোর্টের পিপি অ্যাডভোকেট আব্দুল লতিফ, সাবেক পিপি ও বর্ষীয়ান আইনজীবী অ্যাডভোকেট এসএম হায়দার আলী, সাবেক পিপি অ্যাডভোকেট তপন কুমার দাস, সাবেক পিপি অ্যাডভোকেট ওসমান গনি, অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট ফাহিমুল হক কিসলু, অ্যাডভোকেট সাবেক অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট আজাহার হোসেন অ্যাডভোকেট শহীদুল ইসলাম পিন্টু, অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট সৈয়দ জিয়ুর রহমান, অ্যাডভোকেট রেজাউদ দৌলা সবুজ প্রমুখ। আসামীপক্ষে শুনানীতে অংশ নেন বাংলাদেশ হাইকোর্টের অ্যাডভোকেট শাহানারা আক্তার বকুল, অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ (২), অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান পিন্টু, অ্যাডভোকেট কামরুজ্জামান ভুট্টো প্রমুখ। মামলার কার্যক্রম শুরুতেই আসামীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ আসামী সাবেক সাংসদ হাবিবুল ইসলাম হাবিবের পক্ষে অ্যাডভোকেট রুহুল কবীর রিজভি কয়াশা জনিত কারণে বিমান দেরীর কারণে সাফাই সাক্ষী দিতে আসতে পারেননি। তাই তাকে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য সময়ের আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষে বাংলাদেশেরে অতিরিক্ত এটর্ণি জেনারেল এসএম মুনীর, ডেপুটি এটর্ণি জেনারেল সুজিত কুমার চ্যাটার্জী বলেন, কুয়াশার কারণে অ্যাডভোকেট রুহুল কবীর রিজভি সাক্ষ্য দিতে আসতে পারেনি এটা ঠিক নয়। তাছাড়া মঙ্গলবার আদালতে সাফাই সাক্ষীর আবেদনে রুহুল কবীর রিজভীর ঢাকার বাসার যে ঠিকানা আসামীপক্ষ দেখিয়েছিলেন বাস্তবে তা ঠিক নয়। কারণ তিনি থাকেন ঢাকা বিএনপি অফিসে। এ ছাড়া যাদেরকে সাতক্ষীরা ও আশপাশের সাক্ষী মেনেছিলেন আসামীপক্ষ তা দের বড় অংশই আসেননি। সুতরাং ঢাকা থেকে রুহুল কবীর রজিভির সাক্ষীর জন্য নতুন দিন ধার্য করা কালক্ষেপন করা ছাড়া কিছু নয়। আদালত উভয়পক্ষের শুনানী শেষে আসামীপক্ষের আবেদন মঞ্জুর করে বৃহষ্পতিবার রুহুল কবীর রিজভির সাক্ষী গ্রহণ ও একইসাখে যুক্তিতর্কের জন্য দিন ধার্য করেন। অতিরিক্ত এটর্ণি জেনারেল এসএম মুনীর বলেন, আসামীপক্ষের আবেদনকৃত ১৪ জনের মধ্যে আদালত অনুমোদিত ১১জনের সাফাই সাক্ষীর মধ্যে সিটি কলেজের অংকের শিক্ষক প্রভাষক প্রভাষ চন্দ্র বৈরাগী হত্যা মামলাসহ কয়েকটি নাশকতা মামলার আসামী সিটি কলেজের প্রভাষক মনিরুজ্জামান মনিসহ তিনজন বুধবার সাক্ষী দিয়েছেন। আদালত সাাবেক সাংসদ হাবিবুল ইসলাম হাবিবের পক্ষে অ্যাডভোকেট রুহুল কবীর রিজভীর সাফাই সাক্ষী ও একইসাথে যুক্তিতর্কের জন্য বৃহষ্পতিবার দিন দার্য করেছেন। বুধবার ৩৪ জন আসামী আদালতে হাজির ছিলো। আসামীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ বলেন, রুহুল কবীর রিজভির সাফাই সাক্ষীর জন্য আদালত তাদের আবেদন মঞ্জুর করেছেন। সবমিলিয়ে আদালতে তারা ন্যয় বিচার পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদি। প্রসঙ্গত: ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ধর্ষিতা এক মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে দেখতে আসেন। হাসপাতাল থেকে ঢাকায় ফেরার পথে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সাতক্ষীরার কলারোয়া বিএনপি অফিসের সামনে গাড়ি বহরে হামলার অভিযোগ ওঠে তৎকালিন সাতক্ষীরা-১ আসনের সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। এঘটনায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোসলেম উদ্দীন বাদী হয়ে উপজেলা যুবদলের সভাপতি আশরাফ হোসেনসহ ২৭ জনের নাম উল্লেখ পূর্বক অজ্ঞাত ৭০/৭৫ জনের নামে থানায় ব্যর্থ হয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেন। পরে আদালতের নির্দেশে এক যুগ পর ২০১৪ সালের ১৫ অক্টোবর কলারোয়া থানায় মামলাটি রেকর্ড করা হয়। এরপর ২০১৫ সালের ১৭ মে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাতক্ষীরা ১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ৫০ জনের নাম উল্লেখ করে ৩০ জনকে স্বাক্ষী করে সম্পূরক অভিযোগপত্র জমা দেন মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা শেখ সফিকুল ইসলাম। সাতক্ষীরা চীপ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৯ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য গ্রহণের পর ২০১৭ সালের ২১ সেপ্টেম্বর আসামীপক্ষের আপীল আবেদনে মামলার কার্যক্রম স্থগিতের আদেশ দেন উচ্চতর আদালত। এরপর রাস্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে উচ্চতর আদালত চলতি বছরের ২২ অক্টোবর মামলাটির স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে নথি পাওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে মামলাটি নিষ্পত্তি করতে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতকে নির্দেশ দেন। সেই নির্দেশ অনুযায়ী মামলাটি বিচারিক কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। মামলায় ২০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। ৪৯ জন আসামীর মধ্যে ১৬ জনের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। এসজি/ডেক্স সংবাদটি ৩৩৮ বার পড়া হয়েছে আপনার মতামত লিখুন : আরও পড়ুন দেবহাটায় ট্রলি চাঁপায় এক স্কুল ছাত্রী নিহত নির্যাতিতদের নিয়ে সরকার গঠন হবে: তারেক রহমান