পাইকগাছায় ৩ হাজার একর খাস জমির বে-দখল প্রকাশিত: ৯:৪৫ অপরাহ্ণ, মে ২৪, ২০১৯ | আপডেট: ১১:২২:অপরাহ্ণ, মে ২৪, ২০১৯ বন্দোবস্ত কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে ৬ বছর : রাজস্ব বঞ্চিত’র পাশাপাশি নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছে সরকার পাইকগাছা (খুলনা) সংবাদদাতা: খুলনার পাইকগাছায় প্রায় ৬ বছর ধরে বন্ধ রয়েছে সরকারি খাঁস জমির একসনা বন্দোবস্ত কার্যক্রম। এতে সরকার প্রতি বছর অর্ধকোটি টাকা রাজস্ব বঞ্চিতর পাশাপাশি দীর্ঘ দিন তদারকি না থাকায় সরকারি সম্পত্তি চলে যাচ্ছে প্রভাবশালী ও ভূমিদস্যুদের দখলে। হাজার হাজার ভূমিহীন ও দরিদ্র পরিবার বঞ্চিত হচ্ছেন। অন্যদিকে গত ৬ বছর আগে এক সনা বন্দোবস্ত নিয়ে এখনো দখল বজায় রেখেছেন অনেকেই। এমনকি ঐসময় প্রভাবশালীদের মধ্যেও খাস জমির বন্দোবস্ত প্রদান করায় ইতোমধ্যে অনেকে ঐ জমির নক্সা পরিবর্তন করে নিয়েছেন স্থায়ী দখল। কোন কোন এলাকায় বন্দোবস্ত না নিয়েও সরকারি জমি ব্যক্তি নিয়ন্ত্রনে চলে গেছে। অনেকে আবার একসনা কৃষি বন্দোবস্ত নিয়ে নির্মাণ করেছেন ইমারত। ঠিক এমন পরিস্থিতিতে একাধিক এনজিও বিদেশী অর্থায়নে খাস জমির সুষ্ঠু বন্টনে কাজ করছেন অনেকটা ঢাক-ঢোল পিটিয়ে। ধারণা করা হচ্ছে,নতুন করে বন্দেবস্ত কার্যক্রম শুরু হলে সংঘর্ষ এড়াতে বাধ্যতামূলক দখলি সম্পত্তির বন্দোবস্ত চলে যাবে প্রভাবশালীদের মধ্যেই। উপজেলা ভূমি অফিস জানায়, পাইকগাছায় প্রায় ৩ হাজার একর একসনা বন্দোবস্তযোগ্য কৃষি খাস জমি রয়েছে। ইতোপূর্বে যার প্রায় ২ হাজার একর জমি বন্দোবস্ত দেয়া হয় গরীব, দুস্থ, অসহায় ও ভূমিহীনদের মাঝে। বন্দোবস্ত কার্যক্রম ২০১২-১৩ অর্থ বছর পর্যন্ত চলমান থাকলেও আকষ্মিক ২০১৩-১৪ অর্থ বছর থেকে অজ্ঞাত কারণে কৃষি খাস জমির নতুন বন্দোবস্ত ও নবায়ন বন্ধ করে দেয় সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ। এতে গত ৬ বছর যাবৎ প্রায় ২ হাজার একর খাস জমি ব্যক্তি দখলে থাকলেও নবায়ন বন্ধ থাকায় তার রাজস্ব পাচ্ছেনা সরকার। অন্যদিকে নতুন বন্দোবস্ত বন্ধ থাকায় আরো প্রায় ১ হাজার একর খাসজমির পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছে সরকার। এক কথায় সরকারি জমি কাগজে থাকলেও দখলে নেই,সিংহভাগ জমির দখল ও নিয়ন্ত্রণ দু’টোই চলে গেছে প্রভাবশালী ও ভূমিদস্যুদের কব্জায়। নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্র জানায়,বিভিন্ন সময় সরকার অসহায় ভূমিহীনদের মধ্যে একসনা কিংবা চীরস্থায়ীভাবে খাস জমি বন্দোবস্ত দিলেও অনেকেই এখন পর্যন্ত তাদের দখল বুঝে পায়নি। লবণ পানির চিংড়ি ঘেরের মধ্যে অধিকাংশ খাস জমি বিদ্যমান থাকায় তার দখল কার্যক্রমও বিভিন্ন সময় মুখ থুবড়ে পড়ে। এছাড়া এতদ সংক্রান্ত অনেক মামলাও বিচারাধীন রয়েছে বিভিন্ন আদালতে। এব্যাপারে পাইকগাছা উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভূমি) অফিসে খবর নিতে গেলে জানাযায়,সর্বশেষ কর্মকর্তা ডা:আব্দুল আউয়াল বদলীর পর এখন পর্যন্ত কাউকে পোস্টিং দেয়া হয়নি। এব্যাপারে কপিলমুনি ইউনিয়ন ভূমি অফিসের ইউএলএও মোঃ জাকির হোসেন জানান,সরকার ভূমিহীনদের মধ্যে একসনা বন্দোবস্ত দিয়ে আবাদযোগ্য জমির (ধান চাষে) একর প্রতি ৫ শ’ টাকা আর মাছ চাষে ১ হাজার ৫ শ’টাকা করে রাজস্ব আদায় করে থাকেন। তবে গত প্রায় ৬ বছর সকল প্রকার বন্দোবস্ত কার্যক্রম বন্ধ থাকায় রাজস্ব আদায়ও সেই থেকে বন্ধ রয়েছে। তবে আগামীতে ফের কার্যক্রম শুরু হলে তাদের কাছ থেকে কোন বকেয়া আদায় কিংবা অগ্রাধিকার দেওয়া হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে জাকির হোসেন দখল সূত্রে তাদের অগ্রাধিকারের বিষয়টি স্বীকার করলেও বকেয়া আদায়ের বিষয়টি কতৃপক্ষের বলে ফোন কেটে দেন। পরক্ষণে একাধিক বার ফোন দিলেও রিসিভ না হওয়ায় জানা সম্ভব হয়নি উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ কপিলমুনি ইউনিয়নে খাস জমির পরিমাণ ঠিক কত একর। সরকারের রাজস্ব ও সাধারণ ভূমিহীনদের কথা বিবেচনায় রেখে তৎকালীণ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আবুল আমিন যোগদানের পর বন্ধ থাকা বন্দোবস্ত কার্যক্রম চালু করতে গত ১৯ এপ্রিল ’১৬ উপজেলা পরিষদের সাধারণ সভায় উত্থাপনপূর্বক জেলা প্রশাসককে অবগত করলেও অদ্যবধি কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এপ্রসঙ্গে বেসরকারি সাহায্যসেবী প্রতিষ্ঠান মুক্তি ফাউন্ডেশন বিদেশী অর্থায়নে খাস জমির সুষ্ঠু বন্টনসহ পূণর্বাসনে কাজ শুর করেছে। সম্প্রতি এক প্রকল্প অবহিতকরণ সভায় সংগঠনটির পরিচালক গোবিন্দ ঘোষ বলেন,সাতক্ষীরাসহ পার্শ্ববর্তী সব জেলায় একসনা বন্দোবস্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে। তবে পাইকগাছা উপজেলায় প্রায় ৬ বছর কার্যক্রম বন্ধ থাকায় তাদের এনজিও ভিত্তিক কার্যক্রমও মারাত্বভাবে বাঁধাগ্রস্থ হচ্ছে। সুন্দরবনটাইমস.কম/আমিনুল ইসলাম বজলু/পাইকগাছা জমি বেদখলপাইকগাছায় ৩ হাজার একর খাস জমির বে-দখল সংবাদটি ৩৫৩ বার পড়া হয়েছে আপনার মতামত লিখুন : আরও পড়ুন পাটকেলঘাটায় নবজাগরণ সমাজ কল্যান পরিষদের সাধারণ সভা উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরায় সূর্যমুখী চাষে ব্যপক সম্ভাবনা