কেশবপুরে মাছের ঘের দখল: টংঘর ভাঙচুর: আহত ৪

প্রকাশিত: ১০:৩৬ অপরাহ্ণ, জুন ১৭, ২০২০ | আপডেট: ১০:৩৬:অপরাহ্ণ, জুন ১৭, ২০২০

যশোরের কেশবপুরে প্রভাবশালী এক ব্যক্তি মঙ্গলবার রাতে উপজেলার খতিয়াখালি বিলের একটি মাছের ঘের জোরপূর্বক দখল ও টংঘর ভাংচুর করে নিয়ে ঘেরের ম্যানেজারসহ ৪ জনকে মারপিট করে আহত করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ঘের মালিক সেলিমুজ্জামান আসাদ থানায় অভিযোগ করেছেন। খবর পেয়ে বুধবার পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।

সোহাগ মাল্টিমিডিয়া এন্ড ট্র্যাভেলস

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ৪ বছর আগে উপজেলার খতিয়াখালি বিলের ৩৫ বিঘা জমি কৃষকের কাছ থেকে লিজ নিয়ে মাছের ঘের করেন শহরের আলতাপোল এলাকার মেসার্স রাহেলা ফিসারিজের স্বত্ত্বাধিকারী মো. সেলিমুজ্জামান আসাদ। বিগত ৪ বছরের মেয়াদ পূর্ণ হবার পর তিনি কৃষকের নিকট থেকে প্রতি বিঘা সাদা জমি ১৩ হাজার ও খাল ভেড়ির বার্ষিক হারি ৩৬ হাজার টাকা চুক্তিতে পুনরায় চলতি বছরের ১ জুন লিজ হিসেবে গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে কৃষকের দাবি অনুযায়ী সেলিমুজ্জামান আসাদ বিঘা প্রতি সাদা জমির হারি ১৬ হাজার টাকা বাড়িয়ে দেন। ৫৫ জন জমির মালিকের মধ্যে ১০/১১ জন ওই চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর না করে উপজেলার খতিয়াখালি গ্রামের মিঠু দত্তের নামে চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেন। সেলিমুজ্জামান আসাদ হারির টাকা পরিশোধ করেন না মর্মে জমির মালিকগণের পক্ষে খতিয়াখালি গ্রামের আনিছুর রহমান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। পরবর্তীতে তিনি নিজের ভুল বুঝতে পেরে তার অভিযোগটি লিখিতভাবে প্রত্যাহার করে নেন।

ঘের মালিক সেলিমুজ্জামান আসাদের অভিযোগ, ঘেরটি দখলে নেয়ার জন্যে মিঠু দত্ত নানাবিধ ষড়যন্ত্র করে চলেছেন। তিনি মঙ্গলবার রাতে ১০/১১ জন ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী দিয়ে উক্ত ঘেরে তার নির্মাণকৃত ৪/৫ টি টংঘর ভাঙচুর করে ঘেরের মধ্যে ফেলে দেয় এবং ঘেরটি দখল করে নেয়। দুপুরে ঘেরের ম্যানেজার সুমন ফকির ও ঘেরের কর্মরত শ্রমিক সাজ্জাত হোসেন, মাদার ও আলম ঘেরে গেলে মিঠু দত্ত’র লোকজন তাদেরকে পিটিয়ে আহত করে।

বুধবার সকালে সরেজমিনে ঘেরে গিয়ে দেখা যায় আব্দুস সাত্তার ও আজিজুর রহমানের নেতৃত্বে ১০/১১ জন ব্যক্তি নতুন করে টংঘর নির্মাণ করছেন। জানতে চাইলে আব্দুস সাত্তার বলেন, তিনি গত ৪ বছর সেলিমুজ্জামান আসাদের কাছ থেকে হারির টাকা নিয়ে জমি লিজ দিয়েছিলেন। এবার তিনি সেলিমুজ্জামান আসাদের চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর না করে মিঠু দত্তকে জমি দিয়েছেন এবং তার নেতৃত্বেই টংঘর নির্মান করা হচ্ছে। আজিজুর রহমান বলেন, জমি লিজ দিয়ে তার কাছ থেকে অদ্যাবধি হারির টাকা পাইনি। তাই এবছর তাকে জমি দেব না।

এ ব্যাপারে মিঠু দত্ত জানান, এলাকার কৃষকরা নিজ নিজ উদ্যোগেই তাদের জমি আমার নামে লিজ দিয়ে চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করে দিয়েছেন। ঘেরের টংঘর ভাঙ্গার সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই। কে বা কারা টংঘর ভেঙ্গেছে তাও আমি জানি না।

ঘের মালিক সেলিমুজ্জামান আসাদ বলেন, ওই ঘেরে আমার ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকার মাছ রয়েছে। গত ৪ বছর যাবত ওই ঘেরটি করে আসছি। কোন কৃষকের সাথে হারির টাকা নিয়ে এখনও পর্যন্ত সমস্যা হয়নি। এবারও জমির মালিকদের সাথে চুক্তিপত্র হয়েছে। মোট ৫৫ জন জমির মালিকের মধ্যে ১০/১১ জন জমির মালিক ওই চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর না করে উপজেলার খতিয়াখালি গ্রামের মিঠু দত্তের নামে চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেন। তার ইন্দন ও উপস্থিতিতে আমার ঘেরটি দখল করে নিয়ে টংঘর ভাংচুর করে ফেলে দেয়। এ সময় বাঁধা দিতে গেলে ঘেরের ম্যানেজারসহ ৪ জনকে মারপিট করে আহত করেছে।

এ ব্যপারে কেশবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. জসিম উদ্দীন বলেন, সেলিমুজ্জামান আসাদ বুধবার সকালে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে কাউকে পায়নি। বিষয়টি তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

মশিয়ার রহমান। নিজস্ব প্রতিবেদক। কেশবপুর, যশোর