কেশবপুরে বিষমুক্ত সবজি চাষে খন্দকার শফি এলাকার অনুপ্রেরণা প্রকাশিত: ৩:২৭ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৯, ২০২০ | আপডেট: ৩:২৭:অপরাহ্ণ, জুলাই ১৯, ২০২০ সাবেক ব্যাংকার খন্দকার শফি। গ্রামের বাড়ি যশোরের কেশবপুরের ব্রক্ষ্মকাটি গ্রামে। থাকেন ঢাকায়। করোনা শুরুর প্রথম দিকেই চলে আসেন গ্রামে। করোনার প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় ঢাকায় ফেরেননি। সিদ্ধান্ত নেন বিষমুক্ত সবজি চাষ করে করোনাকালীন সময়ে পরিবারের পাশাপাশি এলাকার মানুষের পুষ্টির চাহিদা মেটানোর। জানা গেছে, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা খন্দকার শফি ঢাকার জাপান গার্ডেন সিটি মোহাম্মদপুরে থাকেন। সেখানে তার এক্সপোর্ট ইমপোর্টের ব্যবসা রয়েছে। ব্যবসা বড় ছেলের উপর দিয়ে ফেব্রুয়ারি মাসের শেষের দিকে গ্রামের বাড়িতে চলে আসেন। এরই মাঝে করোনার প্রাদুর্ভাব বাড়তে থাকাই তিনি ঢাকাতে না ফিরে বাড়িতে বিষমুক্ত সবজি চাষ করার সিদ্ধান্ত নেন। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাড়ির কেয়ারটেকার আক্তার হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে ৩৯ শতক জমির উপর শুরু করেন বিভিন্ন প্রজাতির সবজি চাষ। সম্পূর্ণ জৈব সার ব্যবহার করে বেগুন, ডাটা শাক, পুইশাক, ঢেড়স, উচ্চে, ঝিঙ্গে, চাল কুমড়া, লাউ, কাকরোল, কাকুড়, মেটে আলু, মানকচুসহ নানা প্রজাতির সবজি চাষ করেছেন। ওই ক্ষেতের উৎপাদিত কোন সবজিতে রাষায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার করা হয় না । বিষমুক্ত সবজি উৎপাদনের খবর পেয়ে কৃষি বিভাগ সহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ ওই সবজি ক্ষেতে উপস্থিত হয়ে খন্দকার শফিকে উদ্দীপনা ও পরামর্শ দিয়ে আরো আগ্রহী করে তুলছেন। উপজেলা কৃষি অফিসের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবদুর রশিদ প্রায় দিনই ওই ক্ষেতের সবজির গুনগত মান বৃদ্ধির জন্য পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। খবর পেয়ে কেশবপুর পৌরসভার মেয়র রফিকুল ইসলাম মোড়ল ওই ক্ষেত পরিদর্শন করেন। সরেজমিন ব্রক্ষ্মকাটি গ্রামের ওই সবজি ক্ষেতে গিয়ে দেখা যায়, সাবেক ব্যাংকার খন্দকার শফি নিজ হাতে ক্ষেতের সবজি পরিচর্যা করছেন। করোনাকালে এলাকার মানুষের পুষ্টি বৃদ্ধির জন্য জৈব সার দিয়ে উৎপাদিত সবজি তিনি প্রতিবেশিদের মাঝে বিতরণ করছেন। এ সময় প্রতিবেশী গোলাম মোস্তফা ওই ক্ষেতের পাশে এলে তাকেও সবজি দিতে দেখা যায়। এ ভাবেই তিনি গত ৩ মাস ধরে প্রতিবেশীদের মাঝে বিষমুক্ত সবজি বিতরণ করে চলেছেন। বিষমুক্ত সবজি উৎপাদনের কারনে এলাকার মানুষ সকাল বিকেল তার ক্ষেত দেখার জন্য ভিড় জমাচ্ছে। বর্তমান এ চাষের মাধ্যমে তিনি এগিয়ে যেতে চান। খন্দকার শফির বিশেষ দিক হলো সবজি চাষে তিনি নিজ হাতে গাছের পরিচর্যা করেন। সাবেক ব্যাংকার খন্দকার শফি বলেন, বাড়িতে করোনাকালীন সময়ে এসে ঢাকায় ফিরতে না পেরে সবজি উৎপাদনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। নিজ পরিবারের পাশাপাশি করোনাকালীন যাতে প্রতিবেশিদের পুষ্টির কোন ঘাটতি না হয় সে লক্ষ নিয়েই বিষমুক্ত সবজি উৎপাদন করছি। গত ৩ মাস ধরে প্রতিবেশীদের বাড়িতে ক্ষেতের সবজি পৌছে দেয়া হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, এলাকার মানুষ ও কৃষি অফিসের উৎসাহ ও পরামর্শ পেয়ে ক্ষেতের পাশে আরো ৬৬ শতক জমিতে মাটি ভরাট করে আর একটি নতুন সবজি ক্ষেত করার উদ্যোগ নিয়েছি। কেশবপুর পৌর মেয়র রফিকুল ইসলাম মোড়ল ওই ক্ষেত পরিদর্শন করে জানান, করোনাকালীন এলাকার মানুষের পুষ্টি বৃদ্ধির জন্য খন্দকার শফির বিষমুক্ত সবজি উৎপাদন এখন এলাকার মানুষের নিকট প্রেরনা হিসেবে দেখা দিয়েছে। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মহাদেব চন্দ্র সানা বলেন, খন্দকার শফির এ উদ্যোগকে এগিয়ে নেয়ার জন্য সার্বক্ষণিকভাবে কৃষি অফিসের মাধ্যমে পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। তাকে এভাবেই সবজি উৎপাদনের জন্য অফিস থেকে সার্বিক সহযোগিতা দেয়া হবে। সংবাদটি ৫৯৫ বার পড়া হয়েছে আপনার মতামত লিখুন : আরও পড়ুন কেশবপুরে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টিতে বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত আজ মধু কবির ১৯৯তম জন্মবার্ষিকী, সাগরদাঁড়িতে সপ্তাহব্যাপী মধুমেলা শুরু