কেশবপুরে প্লাবিত অর্ধশত বাড়িঘর, অনিশ্চিত ৪’শ হেক্টর বোরো আবাদ প্রকাশিত: ১১:০৭ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৫, ২০২১ | আপডেট: ১১:০৭:অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৫, ২০২১ যশোরের কেশবপুরে পাউবো’র স্লুইচ গেট পলিতে ভরাট হওয়ায় বাড়িঘর প্লাবিত হওয়ার দৃশ্য। যশোরের কেশবপুরে ২৭ বিল এলাকার ডায়ের খালের পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৮ ব্যান্ড স্লুইচ গেট পুণঃর্খননের ৩ মাসেই পলিতে ভরাট হয়ে গেছে। ফলে পানি নিষ্কাশন পথ বন্ধ হয়ে পাঁজিয়া ইউনিয়নের ৩ গ্রামের ৪’শ হেক্টর জমির বোরো আবাদ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। অপরদিকে, বোরো আবাদের লক্ষ্যে গত ১ সপ্তাহ ধরে ঘের মালিকরা ঘেরের পানি স্যালো মেশিন দিয়ে নিষ্কাশনের চেষ্টা করেও পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় বাগডাঙ্গা, মনোহরনগর গ্রামে ঢুকে অর্ধশত বাড়ি তলিয়ে গেছে। অসময়ে ঘের মালিকদের সৃষ্ট এ বন্যায় সাধারণ মানুষকে দুর্বিসহ জীবনযাপণ করতে হচ্ছে। জানা গেছে, ২৭ বিল এলাকার পাঁজিয়া ইউনিয়নের বাগডাঙ্গা, মনোহরনগর ও মাদারডাঙ্গা গ্রামের বর্ষার অতিরিক্ত পানি ডায়ের খালের ৮ ব্যান্ড স্লুইচ গেট দিয়ে হরি নদীতে নিষ্কাশন হয়ে থাকে। ২০১০ সালের পর হরি নদী নাব্যতা হারানোর কারণে ২৭ বিলসহ কেশবপুরে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। চলতি মৌসুমে বোরো আবাদের লক্ষ্যে বাগডাঙ্গা, মনোহরনগর গ্রামের অধিকাংশ ঘেরের পানি গত ১ সপ্তাহ ধরে ঘের মালিকরা স্যালো মেশিন দিয়ে নিষ্কাশন কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু ডায়ের খাল পলিতে ভরাট হয়ে যাওয়ায় পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না। পানি ঢুকে পড়ছে লোকালয়ে। অসময়ে ঘের মালিকদের সৃষ্ট বন্যায় ইতোমধ্যে বাগডাঙ্গা, মনোহরনগর গ্রামের পরিতোষ রায়, বিকাশ রায়, মানিক চাঁদ রায়, সুকচাঁদ রায়, কার্তিক রায়, অসিম রায়, প্রদীপ রায়, সমিরন রায়, সীমা রায়সহ অর্ধশত বাড়িঘরে পানি থৈ থৈ করছে। এভাবে সেচ অব্যাহত থাকলে ওই গ্রামের অধিকাংশ বাড়িতে পানি উঠে যাবে বলে এলাকাবাসির অভিযোগ। । পাঁজিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম মুকুল বলেন, প্রতি বছর শুষ্ক মৌসুমে সেচ নীতিমালা লঙ্ঘন করে ঘের মালিকরা ভূগর্ভস্থ পানি তুলে ঘের ভরাট করেন। আবার ৩০ পৌষের মধ্যে ঘেরের পানি নিষ্কাশন করে থাকেন। এবছর পানি সরছে না বলেই পানি লোকালয়ে ঢুকছে। জনগণের অভিযোগের ভিত্তিতে ১৫ থেকে ১৬ দিন আগে ঘেরের পানি নিষ্কাশন বন্ধে এলাকায় মাইকিং করা হয়েছে। কিন্তু ঘের মলিকরা তা না মেনে সেচ অব্যাহত রেখেছেন। এ ব্যাপারে উপজেলা সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা এমএম আলমগীর কবির জানান, বাগডাঙ্গা, মনোহরনগর ও মাদারডাঙ্গা গ্রামের ২ হাজার ১০০ একর জমির মধ্যে ডাঙা মাত্র ৫২৫ একর। অবশিষ্ট জলাকারে ১১৩ টি ছোট বড় মাছের ঘের রয়েছে। এরমধ্যে অধিকাংশ ঘের ওই এলাকার দীন মোহাম্মদ খিরু ও সেলিমুজ্জামান আসাদের। কৃষকের বোরো আবাদে ঘেরের পানি নিষ্কাশনের শর্তে তারা ঘেরে সেচ দিচ্ছেন। নিষ্কাশন সম্ভব না হলে চলতি বছর ৪’শ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ অনিশ্চিত। কেশবপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মুন্সি আছাদুল্লাহ বলেন, পলির হাত থেকে ২৭ বিলসহ বাগডাঙ্গা, মনোহরনগর গ্রাম রক্ষায় ডায়ের খালের ৮ ব্যান্ড স্লুইচ গেট নির্মাণ করা হয়। গত অক্টোবরে ১২ লাখ টাকা ব্যয়ে ডায়ের খালের ৮ ব্যান্ড স্লুইচ গেটের পলি অপসারণ করা হয়েছিল। কিন্তু হরিনদীর নাব্য না থাকায় পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না। হরি নদীর ভবদহ থেকে খর্নিয়া পর্যন্ত ১৯ কিলোমিটার পলিতে ভরাট হয়ে গেছে। ভবদহ প্রকল্পের মধ্যে ওই নদী অন্তর্ভূক্ত হয়েছে। যদি প্রকল্প অনুমোদন হয় তাহলে ৮ থেকে ১০ বছর এলাকা জলাবদ্ধতার হাত থেকে রক্ষা পাবে। এছাড়া বাগডাঙ্গা এলাকার পানি সমস্যা নিরসনে গত ৯ জানুয়ারী ২১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। সংবাদটি ২৪৬ বার পড়া হয়েছে আপনার মতামত লিখুন : আরও পড়ুন কেশবপুরে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টিতে বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত আজ মধু কবির ১৯৯তম জন্মবার্ষিকী, সাগরদাঁড়িতে সপ্তাহব্যাপী মধুমেলা শুরু