করোনায় রাজগঞ্জে চরম বিপাকে নিম্নমধ্যবিত্তরা প্রকাশিত: ৯:৪৭ অপরাহ্ণ, জুন ২৮, ২০২০ | আপডেট: ৯:৪৭:অপরাহ্ণ, জুন ২৮, ২০২০ নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবার পারে না হাত পাততে, পারে না মুখ খুলতে। এমনই প্রেক্ষিতে বর্তমানে করোনা পরিস্থিতিতে মণিরামপুরের রাজগঞ্জ অঞ্চলের নিম্নমধ্যবিত্ত ও অল্প আয়ের মানুষেরা রয়েছেন চরম ভোগান্তিতে আর বিপাকে। নানা বিধিনিষেধ আর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দুর্বিসহ জীবন-যাপন করছেন কনেকটা কর্মহীন এসকল পরিবার। সাংসারিক খরচের মাত্রা আগের মত থাকলেও কমেছে আয়ের পথগুলো। করোনার প্রথম দিকে অনেকে কিছুটা সহয়তা পেলেও এখন সেটাও মিলছে না। এমনিই অভিব্যক্তি ফুটে উঠেছে রাজগঞ্জ অঞ্চলের সীমিত আয়ের মানুষের কাছে। চরম বিপদে আছেন তারা। বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের নাভিশ্বাস যেন দেখার মত কেউ নেই। এই শ্রেণির মানুষেরা বর্তমান করোনা পরিস্থিতির মহাসংকটে আছেন। তরিকুল ইসলাম (৪০) রাজগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয় মোড়ে পুরি-সিংগাড়া বিক্রি করে সংসার চালাতেন। তিনি গত ২৭ জুন সকালে এ প্রতিনিধিকে অত্যান্ত কষ্ঠের সাথে বললেন, ‘কি-যে বিপদে আছি, তা ভাষায় প্রকাশ করা যাচ্ছে না। প্রায় সাড়ে তিন মাস স্কুল বন্ধ। আয়-রোজগার প্রায় বন্ধই রয়েছে।’ কথায় কথায় তিনি বললেন, ‘এখন আল্লাহ-ই চালাচ্ছে সংসার। তা না হলে চলতো না। এরকমি একজন সিরাজুল ইসলাম (৪৫)। পেশায় চটপটি বিক্রেতা। রাজগঞ্জ ভাসমান সেতু পার্কে চটপটি বিক্রি করে সংসার চালাতো। করোনা পরিস্থিতিতে পার্কে লোকসমাগম নেই, নেই সিরাজুলের চটপটি বিক্রিও। প্রায় তিন মাস বেকার জীবন-যাপন করে হাতে যে জমানো টাকা-পয়সা ছিলো সব শেষ। কাজ নেই রাজগঞ্জ অঞ্চলের কৃষকদেরও। তারা ইরি-বোরো মওসুমে ধান কাটার কাজ শেষ করে এখন বেকার। এখন মাঠে কাজ না থাকায় চরম বিপদেই আছেন। কর্মহীন রয়েছেন তারা। ব্র্যাকের সহযোগীতায় রাজগঞ্জ অঞ্চলের শত শত নারী হাতের কাজ (কুটির শিল্প) কারে কর্মসংস্থানের সন্ধ্যান পেয়েছিলো। একেক জন কাজ করে প্রতি মাসে তিন থেকে পাঁচ হাজার টাকা আয় রোজগার করে জীবিকা নির্বাহ করতো। বর্তমানে করোনা পরিস্থিতির কারণে সেটাও বন্ধ রয়েছে। বাজারের হোটেল শ্রমিক, চায়ের দোকানীরা এখন প্রায় বেকার। তাদের সংসারের অবস্থাও ভালো না। এই শ্রেণির অনেকেই পেশা পাল্টিয়ে মৌসুমী ফলের ব্যবসা করছেন। সব মিলিয়ে রাজগঞ্জ অঞ্চলের অল্প আয়ের মানুষের চরম দুর্দিনে দিন যাচ্ছে। এরপর রয়েছে এনজিও’র কিস্তির চাপ, দোকারদারদের হালখাতার চাপ। তারপর দ্রব্যমূল্যের বাজারে পণ্যক্রয় করতে রীতিমত হিমশিম খাচ্ছে এই শ্রেণির মানুষেরা। এবিষয়ে কথা হয় রাজগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি এস এম রবিউল ইসলামের সাথে। তিনি বলেন, ‘অল্প আয়ের মানুষ যারা, তাদের অবস্থা এখন এই করোনা পরিস্থিতিতে অত্যান্ত দুর্বিসহ। করোনা পরিস্থিতির প্রথম পর্যায়ে এই শ্রেণির লোকজন সরকারি, বেসরকারি ও বিত্তশালীদের নিটক থেকে কিছু ত্রান সামগ্রী পেলেও এখন আর পাচ্ছে না। তাদের হাতে পর্যাপ্ত টাকাও জমা নেই। আর থাকলেও তা শেষ। এখন শুধু হা-হু-তাস ছাড়া আর কিছুই নেই। সব মিলিয়ে চরম দুর্দিনে অভাব-অনাটনে আছে তারা। কর্মহীন হয়ে দুর্বিসহ জীবন-যাপন করতে হচ্ছে তাদের। গোপনে হলেও তাদের সহযোগীয় এগিয়ে আসা সময়ের দাবী’ বাস্তবিক অর্থে অসহায় এসকল মানুষের পাশে দাঁড়াতে সরকারি প্রতিষ্ঠিনসহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি মানবিক আবেদন জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। করোনা ভাইরাস সংবাদটি ৪৯০ বার পড়া হয়েছে আপনার মতামত লিখুন : আরও পড়ুন মণিরামপুরে নিয়ন্ত্রণহীন কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কায় পিতা-পুত্র, দাদা-নাতিসহ ৫জন নিহত শোককে শক্তিতে রুপান্তরিত করে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে: প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য